ডাইনি সন্দেহে ঘরছাড়া পরিবার


বুধবার,১৮/০৩/২০১৫
602

সাধন মণ্ডল, রাইপুর, বাঁকুড়াঃ ‘ জঙ্গলমহল আছে জঙ্গলমহলেই’, তাই তো এক মাসের মাথায় আবার এক আদিবাসী দম্পতিকে ডাইনি আখ্যা দিয়ে ঘরছাড়া করলো আদিবাসী সমাজ। ঘটনা রাইপুরের ব্লকের ঢেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়নগর গ্রামে। আমরা কোন যুগে দাঁড়িয়ে, আমরা ডাইনি আখ্যা দিয়ে মারধর করে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছি আদিবাসী পরিবারকে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে জঙ্গলমহলের রাইপুর ব্লকের ঢেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিবাসী প্রধান গ্রাম জয়নগরে। যে পরিবারকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে গ্রামে মারধর করে গ্রামছাড়া করেছে গ্রামবাসীরা তারা হলেন নন্দলাল মাণ্ডী ( ৭০ ) ও মালতী মাণ্ডী ( ৫৮ )। নন্দলাল মাণ্ডীর অভিযোগ, গত মকরসংক্রান্তির সময় আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী গর্ভবতী অবস্থায় দীর্ঘ রোগ-ভোগের পর মারা যায় তার পরই আমার ভাই কালাচান্দ মাণ্ডী গ্রামবাসীদের সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জানগুরুদের কাছে তার পরে ওড়িষ্যার ময়ূরভাল্লকর কাছে, তিনি নিদান দেন আমার স্ত্রীকে ডাইনি আখ্যা দেন। এরপরই শুরু হয় আমাদের উপর অত্যাচার ও নিপীড়ন। বারে বারে আমাদের নিয়ে গ্রামে বিচার সভা বসে। গত রবিবার রাত্রে বিচার সভায় আমাদের তিন লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য করা হয়। দিতে পারবো না বললে চলে শারিরীক অত্যাচার। পরের দিন সোমবার সকালে একদল গ্রামবাসী আমাদের ঘরে চড়াও হয় এবং আমার বোন, মেয়ে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে গ্রামবাসীরা। তিনি আরো বলেন আমাদের এই গ্রাম থেকে তাড়াবার জন্য এই রকম অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমরা এব্যপারে স্থানীয় বকসী ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করতে যেতেও পারিনি কারণ চারিদিকে লোকজন আমাদের গতিবিধির উপর নজর রেখেছিল। অবশেষে পাশের গ্রামে পালিয়ে এসে রাইপুর থানায় বিষয়টি জানাই এবং রাইপুর থানার পুলিশের সাহায্যেয় রাইপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে এই পরিবারের ঠিকানা রাইপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। জবা মুরমু বলেন, দাদার এই খবর পেয়ে আমি দেখতে এলে আমাকে ওরা মারে। আমরা রাইপুর থানায় কয়েকজনের নামে লিখিত অভিযোগ করেছি। পরিবারটি অত্যন্ত ভয়ের মধ্যে রয়েছে। এই ব্যপারে রাইপুর ব্লকের বিডিও দীপঙ্কর দাস বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি, ঐ গ্রামের আদিবাসী মোড়ল ও গ্রামবাসীদের নিয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনায় বসব। তবে খবর পেয়ে পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। কয়েক দিনের মধ্যে ওখানে একটি সচেতনতা শিবির করা হবে।

Loading...
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code:

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট