খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ২১ জুন। দিবসটি উপলক্ষে কাল রোববার রাজধানী নয়াদিল্লিতে যোগসাধনার সবচেয়ে বড় আসর বসছে। ওই আয়োজনে প্রায় ৩৭ হাজার মানুষ অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে থাকছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতজুড়ে কাল প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের অনুষ্ঠান হবে। প্রধান অনুষ্ঠানটি হবে রাষ্ট্রপতি ভবন ও ইন্ডিয়া গেটের মধ্যবর্তী রাজপথে।
সকাল ছয়টা ৪০ মিনিটে রাজপথের অনুষ্ঠানস্থলে আসবেন মোদি। প্রাথমিক প্রস্তাবনার পর কয়েক মিনিট কথা বলবেন তিনি। সকাল সাতটায় ৩৫ মিনিটের জন্য যোগে বসবেন মোদি।
রাজপথের অনুষ্ঠানে ৩৭ হাজার মানুষ অংশ নেবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। কোনো একক স্থানে যোগের সবচেয়ে বড় আসর হিসেবে রাজপথের কালকের আয়োজনটি বিশ্ব রেকর্ড হতে পারে।
যোগগুরু বাবা রামদেবসহ চারজন বিশেষজ্ঞ রাজপথের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তাদের অনুশীলন ২৮টি বড় পর্দায় দেখানো হবে।
রাজপথের অনুষ্ঠানে বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেবেন। প্রায় ৫০টি দেশের ৮০-১০০ জন বিদেশি এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতজুড়ে বিভিন্ন স্থানে কাল যোগসাধনার অনুষ্ঠান হবে। এসব অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিভিন্ন সদস্য অংশ নেবেন।
এ দিন ডাকটিকিট প্রকাশ করবে সরকার।
সরকারি কর্মকর্তা জানান, রাজপথে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা-পরিকল্পনা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মোদি সরকারের দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ করে ২১ জুনকে প্রথম ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম ভাষণ দেন মোদি। তখন তিনি এমন একটি দিবসকে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। মোদি বলেন, তিনি নিজে প্রতিদিন যোগ সাধনা করেন। এটি তার কর্মশক্তি জোগায়। যোগসাধনা করলে রাতে কম ঘুমালেও চলে।
যোগব্যায়াম ও ভেষজ ওষুধকে জনপ্রিয় করতে নভেম্বরে মোদি প্রথমবার এ বিষয়ে একজন মন্ত্রী নিয়োগ করেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কর্মস্থলে যোগচর্চার একটি পরিকল্পনা নিয়েছেন মোদি।
বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত
শুধু স্বাস্থ্যরক্ষা বা মানসিক চাপ কাটানোর হাতিয়ারই নয়, যোগ এখন ভারতের সামনে কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে৷ কারণ, সমীক্ষা বলছে, আর বছর দুয়েকের মধ্যে যোগ প্রশিক্ষকদের চাহিদা দেশে এবং বিদেশে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাড়বে৷ এখনই বিশ্ব জুড়ে কয়েক কোটি মানুষ যোগাভ্যাস করেন৷ অদূর ভবিষ্যতেই বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যোগভিত্তিক হেলথ ক্লিনিক, আয়ুর্বেদ রিসর্ট, হলিডে ক্যাম্প, কর্পোরেট প্রশিক্ষণ এ সব বিপুল ভাবে বেড়ে যাবে৷ ব্যাপক ভাবে যোগ পর্যটন শুরু হবে৷ এর ফলে যোগের বাজার কয়েক হাজার কোটি ডলারে গিয়ে পৌঁছবে৷ প্রাচীন ভারতের এই অমূল্য রত্নকে কেন্দ্র করে যেমন কর্মসংস্থানের জোয়ার আসবে, তেমনই বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বহুগুণ৷
২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসকে মাথায় রেখে একটা সমীক্ষা চালিয়েছিল বণিকসভা অ্যাসোচেমের হেলথ কাউন্সিল৷ তাদের সমীক্ষা বলছে, বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চাপ বাড়ছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, হতাশা ও বিষাদ৷ শরীর ও মনের স্বাস্থ্য নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷ যোগ তাদের এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারে৷ সে জন্যই অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বজুড়ে যোগের রমরমা দেখা দিতে পারে৷ বিশেষ করে আধুনিক জীবনধারনের ফলে যে চাপ তৈরি হচ্ছে, সে জন্যই মানুষ বেশি করে যোগের প্রতি ঝুঁকছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে এখন প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ বিষাদে ভুগছেন৷ তাদের এই বিষাদ ও হতাশায় ডুবে থাকার ফলে কর্মস্থলে তার প্রভাব পড়ছে৷ তাদের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে৷