সুনন্দা হালদার: এবার বছর শুরুর দিনে একটা বোধ জেগেছিল মনে আর তা লিখেও ছিলাম যে আধুনিকতার নির্মম চর্চা নিদারুণ একাকীত্বে ঘিরে রাখে মনটাকে…তারই প্রতিফলন দেখলাম “ময়ূরাক্ষী” তে ।
‘জীবন মানে শুধু আসা যাওয়া আর খোঁজা’…হারানো ঠিকানা পেয়ে আমরা খুঁজি তাতে পৌঁছনোর পথ, মন হাতড়ে খুঁজি বেঁচে থাকার রসদ । ডিমেনশিয়া, লিভিং ইন দ্য পাস্ট, হ্যালুসিনেশন…এ’ লক্ষণগুলো অশীতিপর, মৃতদার, ইতিহাসের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুশোভন রায়চৌধুরীর মনের আবাদী জমিতে অনাবাদী ছোপ ! যে মনের মধ্যে ময়ূরাক্ষীর ঋতুমতী ধারা বয়, সে’ মন জল রঙে নীল মেঘ আঁকতে বসে ক্যানভাসের এক পাশে আঁকে একটা জানলা, এক ফালি মুক্তি, যেখানে এসে ‘ও’, তার একমাত্র সন্তান আর্যনীল বসবে, তাকে দেখবে, ‘ওর যখন মন খারাপ হবে ।’ আধুনিকতার নিগড়ে বাঁধা শিকাগো নিবাসী আর্যনীল তার ভাঙাচোরা জীবনের কান্নাটাকে লুকিয়ে নিজের থেকে নিজে পালিয়ে বেড়ায় ( এমনটা আজকাল আমাদের হাড়েমজ্জায় ঢুকে গেছে !) তবে ছবির শেষ বেলায় সে কান্না বাঁধ ভাঙে আর হয়তো তার যন্ত্রণার খানিক লাঘব হয় তাতে । তার মনের জানলায় এক ঝলক দখিন্ হাওয়া ছোটবেলার বান্ধবী সাহানা ( অভিনন্দন শিল্পী ইন্দ্রাণী হালদারকে এমন মানানসই প্রাণবন্ত অভিনয়ের জন্য ) । আজকের সময় ছুঁয়ে ছবিটি আমাদের দেখন্তি ‘ভালো আছি’ জীবনচর্চার অন্দরমহলের কথা বড়ো অকপটে বলে পরিমিত সংলাপে । সুশোভনের মতো সংবেদনশীল মানুষ যার মনে জাগে…”We look forward to a time when the power of love will replace the love of power”…তার একাকীত্ব কি ঘোচানো যায় হাউস কীপারের ( শিল্পী সুদীপ্তা চক্রবর্তীকে অকুণ্ঠ অভিনন্দন চরিত্রটির সার্থক রূপায়নের জন্য ) নিয়ম মাফিক সাহচর্যে ?…এ’ এক জ্বলন্ত প্রশ্ন, আকাশ ছোঁয়া আকাঙ্খা, নাম, যশের লোভ আর ভালো থাকার নামে ইঁদুর দৌড়ের তাড়নায় যার সদুত্তর দিতে আজ আমরা অপারগ ।
সেই সাবেকী মানসিকতায় সুশোভন চায় সামনের সুড়ঙ্গ পথে একমাত্র সন্তানকে আঁকড় ধরে শুধু তার স্মৃতিটুকু জিইয়ে রাখতে মনের তলে, তাতে বাকী দুনিয়ার ঘটমানতার স্মৃতিভ্রংশ হতে খেদ নেই তার মনে । সে চায় স্মৃতির সরণি বেয়ে তার মনের আকাশে আজও স্বাতী নক্ষত্রের দ্যুতিতে জ্বলা প্রিয় ছাত্রী “ময়ূরাক্ষী”র স্রোতে আর্যনীলকে ভাসাতে কারণ তার পরিনামদর্শী পিতৃমনের স্থির বিশ্বাস সেই স্রোতস্বিনীই পারবে আর্যনীলের মনের সব ক্ষত ধুয়ে দিতে, তাকে আগলে রাখতে…কিন্তু সময়ের চলমানতায় ময়ূরাক্ষী পথ বদলায়, সে মেশে অন্য মোহনায়, সে অধরাই রয়ে যায়…সুশোভনের চেতনায় তাকে মেরে ফেলা হয় যার প্রকাশে পিতৃমন মাঝ রাতে ডুকরে ওঠে কান্নায় !
আর আর্যনীল, ক’দিন কিছু কথায় কিছু ছোঁয়ায়, বাবার মনের দো’র খোলার চেষ্টা করে ( চেষ্টা করেই বলবো কারণ তার কতটা আন্তরিক আর কতটা শুকনো কর্তব্য, লৌকিকতা, তাতে আমার সংশয় !…শিল্পী প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে আন্তরিক অভিনন্দন তেমন দ্বৈরথ পরিবেশনের জন্য ) তারপর একদিন ভোরে বাবার অজান্তে সে উড়ে যায় সুড়ঙ্গটা খালি করে…অনবদ্য টানাপোড়েন এক শাশ্বত সম্পর্কের, আধুনিকতা-উত্তর সময়ের যা সাবলীল দান, যাকে আমাদের গ্রহণ করতে হয় পরবর্তী প্রজন্মের হাত থেকে ! ‘সুশোভন’ চরিত্রের মর্মস্পর্শী চিত্রায়নের জন্য প্রথিতযশা শিল্পী সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায়কে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি কুর্নিশ করি পরিচালক অতনু ঘোষকে, চোখ বন্ধ করে এমন এক সবাক অথচ নির্বাক চলচ্চিত্রের স্পন্দন অনুভব করার অভিনব সুযোগ করে দেওয়ার জন্য, কালের কাছে অমোঘ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য…ঠিকানা হাতে আমরা কি পারবো কোনোদিন পথটা খুঁজে পেতে, শান্তির নন্দনে পৌঁছতে না কি দিনরাত ঘুরে মরবো দুর্বিসহ যন্ত্রণার ঘুর্ণিপাকে ?
রাজভবনের এক কর্মীর অভিযোগ হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। রাজভবনে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে…
সামাজিক বার্তা, পরিবেশ বার্তা। নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে নিজে রক্তদান করলেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী…
রাজনীতির সময়ে অনেক সময় আসে যখন সাধারণভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর কাছে এক পদ দিয়ে দেওয়া…
তিনি ভারতীয় তামিল চলচ্চিত্রের মহাতারকা রজনীকান্ত। শুধু তামিল ভাষাতেই হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় ও ইংরেজি ভাষার…
কলকাতার নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত ‘কড়ক সিং’ নামের হিন্দি ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশী…
বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রা তার আর্থিক মুদ্রার এক ধারালো নিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি…