বাংলা এক্সপ্রেস: কখনও স্বামী অসুস্থতায টাকা দরকার কখনও মা হাসপাতালে ভর্তি টাকা দরকার ।এই বলে কাকুতি বিনতি জানিয়ে আমাদের সোনার অলংকার টা একেবারে কিনে নিন নইলে বন্ধুক রেখে এক্ষুনি টাকা দিন। কোলের দুই শিশু কে সঙ্গে নিয়ে দুই মহিলা কাতর আবেদন করে মানুষের কাছে এবং বিশ্বাস স্থাপন করে বিভিন্ন দোকান ঘুরে বিক্রি করে নকল সোনা। ঠিক সেই কায়দায় অনুসরণ করে চাকুলিয়ার সমাসপুর এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে ১৫ দিন আগে নকল সোনার অলংকার দিয়ে ৪২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল প্রতারক দুই মহিলা ।তার পর এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার চাকুলিয়ার শকুন্তলা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে ফের একই কায়দায় নকল সোনার অলংকার বিক্রয় করার চেষ্টা করলে হাতে নাতে প্রতারক দুই মহিলা ধরা পড়ে ।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। দলে দলে ঘটনাস্থলে প্রচুর মানুষের ঢল নামে। এলাকার স্থানীয় মহিলারা প্রতারক দুই মহিলা কে উত্তম মধ্যম মার দিলে আগের হাতিয়ে নেওয়া টাকা আকাউন্টে ট্রান্সফার করে ফেরত দেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রতারক দুই মহিলা কে উদ্ধার করে নিয়ে আসে চাকুলিয়া থানায়।পুলিশ জানিয়েছে প্রতারক এক মহিলার নাম চন্দনা সাহা বয়স ২৮ বছর। অপরজনের নাম রিঙ্কি সাহা বয়স ২৬ বছর। তাদের বাড়ি মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায়। সূত্রের খবর, পুলিশের জেরার কাছে তারা স্বীকার করেছে তাদের নকল সোনার অলংকার গুলি তৈরি হয় বিহারের ভাগলপুরে। সেখান থেকে নিয়ে গ্রাম গঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্বর্ণ দোকানে ঘুরে বিক্রি করত নকল সোনার অলংকার গুলি। একটা অলংকার বিক্রি করলে লাভ হত মোটা অংকের টাকা। বিহারের কিষান গঞ্জে তাদের ডেরা রয়েছে।
বাংলা, হিন্দি ও স্থানীয় ভাষায় সাবলীল ভাবে তারা বলতে পারে। সহজে মানুষের সঙ্গে মিশতে পারে। অসংলগ্ন কথা বার্তা এবং নাম ঠিকানা কোনটাই ঠিক ঠাক বলছিল না প্রতারক দুই মহিলা।চাকুলিয়ার জনৈক স্বর্ণ ব্যবসায়ী নরেশ চন্দ্র কর্মকার বলেন , এমন উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে তাদের নকল সোনার অলংকার গুলি সহজে তা চেনার উপায় নেই। তিনি বলেন, তাদের অলংকার গুলি প্রথমে ঝালাই করেও ধরা যায়নি। পরে কম্পিউটারে যাঁচাই করে বুঝা যায় নকল সোনা। এই ভাবে কত মানুষ কে দিনের পর দিন তারা ঠগিয়েছে তা বলা মুশকিল। তাদের সম্পর্কে এলাকার সমস্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অবগত করা হয়েছিল। এই ধরণের মহিলা চোখে পড়লে আমাদের খবর দিবেন। আমাদের পাতা ফাঁদে দ্বিতীয়বার ধরা পড়ে প্রতারক দুই মহিলা বলে জানান জৈনক স্বর্ণ ব্যবসায়ী।এদিকে চাকুলিয়া থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও প্রতারক দুই মহিলার কাছ থেকে প্রায় এক লক্ষ টাকার অলংকার উদ্ধার করে। পরে পুলিশ শুক্রবার তাদের কে ইসলাম পুর আদালতে পাঠায় বলে জানা গেছে।