মাঝে মাঝে আমরা আমাদের শরীরে বেশ কিছু অদ্ভুত লক্ষণ দেখতে পাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই লক্ষণ গুলি কোন না কোন রোগের উপসর্গ। তাই শরীর সম্বন্ধে সতর্ক থাকুন, অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলে অবহেলা না করে শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অপ্রশমনীয় (না মেটা)তৃষ্ণা :
অত্যধিক তৃষ্ণা (পলিডিপসিয়াও বলা হয়) এবং অতিরিক্ত প্রস্রাব করা (পলিউরিয়ায়ও নামে পরিচিত) ক্লাসিক ডায়াবেটিসের উপসর্গ। এই লক্ষণগুলি থাকলে তৎক্ষণাত ডাক্তারের কাছে যান।
আপনার ডায়াবেটিস থাকলে,আপনার রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ(glucose)তৈরি হয়। আপনার কিডনি অতিরিক্ত গ্লুকোজ(glucose) পরিশোধন এবং শোষণ করার জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য হয়। তার ফলে আপনার শরীরে ডিহাইড্রেশন(dehydration) তৈরী হয়।
হাত, পা শির শির করা বা টন টন করা বা ঝন ঝন করা :
ডায়াবেটিসের ফলে নার্ভের ক্ষতি হয়, তার ফলে হাতে এবং পায়ে শির শির করা বা টন টন করা বা ঝন ঝন করা অথবা যন্ত্রণা শুরু হয়। এটি ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ। ডায়াবেটিস বাড়ার সাথে সাথে এই উপসর্গটি বার বার হতে থাকে।
এই লক্ষণটি থাকলে ডাক্তারের কাছে যান এবং চিকিৎসা করুন।
চুলকানি :
চামড়ায় চুলকানি অনেকসময় বড় ব্যাধির একটি একটি উপসর্গ। দীর্ঘদিন যাবৎ চুলকানি হয়ে থাকলে সেটি ডারমাটাইটিস, সোরিওসিসের লক্ষণ হতে পারে। অনেকদিন হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে রোগটি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তাই শরীরে চুলকানি দেখা দিলে শীঘ্রই ডাক্তার দেখান, তানাহলে এর চিকিৎসা যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ। চামড়ার রোগ অনেক সময় যকৃৎ রোগ(liver disease) বা ক্যান্সার(cancer) যেমন লিউকেমিয়া(leukemia) অথবা লিম্ফোমা(lymphoma) রোগের উপসর্গ হতে পারে।
ফোলা গোড়ালি:
পা এবং গোড়ালি ফুলে যাওয়া অনেক সম্ভাব্য কারণ আছে। যেমন: অতিরিক্ত ওজন। অতিরিক্ত শরীরের ওজন রক্ত সঞ্চালন হ্রাস করতে পারে, যার ফলে পায়ের পাতা, গোড়ালিতে তরল জমা হয়।
গোড়ালি ফোলা কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকার অথবা কিডনি ফেইলিওর (Kidney Failure) এর একটি বিশেষ লক্ষণ। কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীরে সোডিয়াম জমতে শুরু করে তার ফলে গোড়ালি এবং পায়ের পাতা ফোলে।
তাই গোড়ালি ফুলতে দেখলে তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখান।
ঘন ঘন প্রস্বাব:
ডায়াবেটিস রোগে ঘন ঘন প্রস্রাব হয় এবং অস্বাভাবিকভাবে বৃহৎ পরিমাণে হয়। এটি উভয় টাইপ 1 এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস একটি প্রাথমিক উপসর্গ। রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।
এছাড়াও আরও অনেক কারণ আছে যেমন প্রস্টেটের সমস্যায়, গর্ভাবস্থায় প্রভৃতি। তাই এই সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
জিহ্বায় ঘা:
জিহ্বায় একটি ছোটখাটো সংক্রমণ অসাধারণ নয়। ছোট ছোট দানা যা বেশ বেদনাদায়ক। গরম খাবার থেকে কামড় বা জ্বালা থেকে জিহ্বার উপর বা তার নিচে ব্যাথা অন্য একটি সাধারণ কারণ। কিন্তু এছাড়াও জিহ্বায় ঘা ভিটামিন B12 এর ঘাটতির উপসর্গ যার ফলে রক্তাল্পতার সৃষ্টি হয়। ভঙ্গুর নখ ভিটামিন B12 এর ঘাটতির উপসর্গ। জিহ্বায় ঘা অনেকদিন ধরে হতে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
চোয়ালের ক্ষত:
চোয়াল আমাদের হার্টের খুব কাছের। অনেক সময় বুকে ব্যাথা না হয়ে হঠাৎ চোয়াল ব্যাথা হওয়া হার্ট ব্লকের লক্ষণ। নিঃশ্বাসের সমস্যা, বুকের চারপাশে ব্যাথা হওয়া হার্টের রোগের লক্ষণ। এরূপ হলে তৎক্ষণাত ডাক্তারের নিকট যাওয়া উচিৎ।