ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: মহান আল্লাহ তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টির মর্যাদা দিয়েছেন মানুষকে। আর মানুষের মধ্যে তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন মুহাম্মদ (সা.)-কে। যাঁর মর্যাদাকে তিনি সব নবী-রাসুলের মার্যাদার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী আমি আপনার মর্যাদাকে সবার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছি।’ (সুরা ইনশিরাহ, আয়াত : ৪) তাফসিরবিদরা বলেন, যে নবী (সা.) মহান আল্লাহর দরবারে আবেদন করেছেন, হে আল্লাহ! আপনি বলেছেন, আপনি আমাকে সব নবীর ঊর্ধ্বে মর্যাদা দিয়েছেন। অথচ আপনি ইবরাহিম (আ.)-কে আপনার বন্ধু খেতাবে ভূষিত করেছেন। এর থেকে বড় মর্যাদা আর কী হতে পারে? আপনি তুর পাহাড়ে মুসা (আ.)-কে আপনার সঙ্গে কথা বলার যে বিরল সম্মান দিয়েছেন, এর থেকে আমার স্বতন্ত্র মার্যাদা কিভাবে হতে পারে? এবং দাউদ (আ.) সুমধুর কণ্ঠে পাহাড়কে অনুগত করে দিয়েছেন।
তিনি যখন আপনার তাসবিহ পাঠ করতেন, তখন আকাশের পাখিরা সেখানে সমবেত হয়ে যেত। তাঁর সুমধুর সুরে সুর মিলিয়ে পাহাড়গুলো তাসবিহ পাঠ করত। আর সব শেষে ঈসা (আ.)-কে এত বড় সম্মান দিয়েছেন, যখন তিনি শত বছরের পুরনো কোনো কবরের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলতেন, ‘কুম বিইজনিল্লাহ’ (আল্লাহর হুকুমে দাঁড়িয়ে যাও), সঙ্গে সঙ্গে সে উঠে দাঁড়িয়ে যেত। এই মর্যাদার মধ্যে আমার আলাদা কী মর্যাদা হতে পারে? হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে আমার হাবিব! আপনাকে যে মর্যাদা দিয়েছি, অন্য কোনো নবীকে সেই মর্যাদা দেইনি। আরশ থেকে শুরু করে, কোরআনের পাতায় পাতায় যেখানে আমার নাম উচ্চারণ করিয়েছি, সেখানে আপনার নামও উচ্চারণ করিয়েছি। (ইবনে কাসির)। মানুষ শপথ করে আল্লাহর নামে। আল্লাহ শপথ করেন কার নামে? আল্লাহ শপথ করেছেন তাঁর নবীর নামে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, (হে আমার হাবিব!) ‘আপনার (পবিত্র) জীবনের কসম! নিশ্চয়ই তারা তাদের নেশায় ঘুরপাক খাচ্ছিল।’ (সুরা হিজর, আয়াত : ৭২) শুধু তা-ই নয়, যেই ভূমিতে জন্ম নিয়েছিলেন প্রিয় নবী (সা.), তাঁর সম্মানার্থে সেই ভূমির কসম করেছেন মহান আল্লাহ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি শপথ করছি এই নগরীর, আর আপনি এই নগরীরই অধিকারী। (সুরা বালাদ, আয়াত : ১-২)। কারণ তিনি ছিলেন সেই পবিত্র শহরের বাসিন্দা ও নাগরিক।
মহান আল্লাহ তাঁর হাবিবকে কতটা সম্মান দিয়েছেন, তা বোঝার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, তোমাদের কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের কাছে যা আছে তার প্রত্যয়নকারীরূপে যখন তোমাদের কাছে একজন রাসুল আসবে তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮১) ওই আয়াতে মহান আল্লাহ সব নবীকে হুকুম করছেন যে, যখন শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাব হবে, তখন সব ধর্ম রহিত হয়ে যাবে। সবাইকে তাঁর ওপর ঈমান আনতে হবে। শুধু ঈমান এনেই দায়িত্ব শেষ হবে না, বরং সবাইকে তাঁর সর্বাত্মক সহযোগিতায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-কে এতটা সম্মানিত করেছেন যে তিনি পবিত্র কোরআনে আগের নবীদের নাম ধরে ডেকেছেন। যেমন—ইয়া আদম, ইয়া মুসা, ইয়া ঈসা ইত্যাদি। কিন্তু পবিত্র কোরআনের কোনো জায়গায় মহান আল্লাহ আমাদের প্রিয় নবীকে নাম ধরে ‘ইয়া মুহাম্মদ’ ডাকেননি।
সাধারণত দুনিয়াতে বিভিন্ন কীর্তিমান লোকের নামে এলাকার নাম, রাস্তাঘাটের নাম কিংবা ভবনের নাম হয়। কিন্তু কারো ব্যক্তিগত জিনিসের নামে সাধারণত রাস্তাঘাট, এলাকা, ভবন ইত্যাদির নাম রাখা হয় না। অথচ মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে আমাদের প্রিয় নবীর নামে ‘সুরা মুহাম্মদ’ নামকরণ করেছেন। আমাদের প্রিয় নবী কম্বল পরেছিলেন, তা দেখে আল্লাহর পছন্দ হয়েছিল, সেই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে একটি সুরার নাম করেছেন ‘সুরা মুদ্দাসসির’ করে। মহান আল্লাহ তাঁর হাবিবের মতকে সম্মান দিয়ে মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তন করেছেন। রাসুল (সা.) যখন মদিনায় গিয়েছিলেন, তিনি বারবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছিলেন, কারণ বাইতুল মাকদিসের দিকে ফিরে নামাজ পড়তে হচ্ছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি অবশ্যই লক্ষ করি। সুতরাং তোমাকে অবশ্যই এমন কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি যা তুমি পছন্দ করেন। সুতরাং তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৪৪) এখানেই শেষ নয়, আবু লাহাব যখন আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-কে নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছে, তাঁর ধ্বংস কামনা করেছে। তার প্রতিবাদে স্বয়ং আল্লাহ পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করে দিলেন, ‘ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুই হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। (সুরা লাহাব, আয়াত : ১) সাধারণত দুনিয়ার নিয়মেও কোনো রাষ্ট্রের বিষয়ে কেউ তির্যক মন্তব্য করলে প্রধানমন্ত্রী নিজে তার জবাব দেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্ত্রীরাও সে কাজটি না করে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের দিয়ে তার মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়। কিন্তু আবু লাহাব যখন প্রিয় নবী (সা.)-কে নিয়ে তির্যক মন্তব্য করল, সঙ্গে সঙ্গে মহান আল্লাহ নিজে তার প্রতিবাদ করলেন। মহান আল্লাহ তাঁর হাবিবকে এতটাই সম্মান দিয়েছেন যে তাঁর সম্পর্কে আবু লাহাবের মতো একজন নগণ্য বান্দার উক্তির জবাব তিনি নিজে দিয়েছেন।
এমনকি মহান আল্লাহ তাঁর হাবিবকে উদ্দেশ করে বলেন, হে আমার নবী! কাফিরদের ষড়যন্ত্রে আপনি কখনো বিচলিত হবেন না। তাদের ষড়যন্ত্রের জবাব আমি আল্লাহ নিজে দেব। আমিই আপনার জন্য যথেষ্ট। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমিই যথেষ্ট তোমাদের জন্য বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে’। (সুরা হিজর, আয়াত : ৯৫) প্রিয় নবী (সা.) এতই মর্যাদাবান ছিলেন যে তাঁকে মহান আল্লাহ নিজে সর্বোচ্চ চারিত্রিক সার্টিফিকেট দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম, আয়াত : ৪) ছোট্ট এই দুনিয়ার ক্ষুদ্র একটি দেশ, যা মানচিত্রেও ভালোভাবে দেখা যায় না, এমন কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি কারো প্রশংসা করেন, তাঁকে মানুষ কত বড় করে দেখে।
আমাদের প্রিয় রাসুল (সা.) এতই মর্যাদার অধিকারী যে তাঁর প্রশংসা করেছেন আসমান-জমিন, গ্রহ-নক্ষত্র সব কিছুর মালিক মহান আল্লাহ নিজে। তিনি এত বড় মর্যাদার অধিকারী যে মহান আল্লাহ নিজে তাঁর ওপর দরুদ পড়েন (অনুগ্রহ করেন), ফেরেশতারা তাঁর ওপর দরুদ পড়েন এবং সব ঈমানদারকে তাঁর ওপর দরুদ পড়ার হুকুম দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করো এবং তাঁকে যথাযথ সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৬)
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More