Categories: ভ্রমণ

বেড়ানোর ইতিকথা

প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জী কর : রানীক্ষেত এক্সপ্রেস ধরে কাঠগোদাম যখন পৌঁছলাম তখন ভোর পাঁচটা। অন্ধকার সূর্যের আলো ফোটেনি তখনও। দয়াল গাড়ি নিয়ে স্টেশন পৌঁছে ওর মালিক র বাড়ি নিয়ে গেলো সেখানে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমরা ছুটে চললাম বিনসার র পথে। নৈনিতাল বহুবার গেলেও বিন্সার যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই প্রথমেই শুরু করলাম বিনসার দিয়ে। পাহাড়ি জঙ্গল আমার বড়ো প্রিয় । শুরু হলো আঁকা বাঁকা পথে পথ চলা। ওই দেখা যাচ্ছে পাহাড়। আমার বড়ো প্রিয় পাহাড়।ছোট পাহাড় থেকে আস্তে আস্তে বড়ো পাহাড় শুরু হলো। রাস্তায় পরলো ভীম তাল। একটি বিন্দু থেকে দুটি রাস্তা চলে গেছে। একটি নৈনিতাল র দিকে একটি বিনসার র দিকে। আমরা বিনসার র রাস্তা ধরলাম। ধীরে ধীরে পৌঁছে গেলাম প্রায় ৮০০০ ফুট উচ্চতায় পাহাড়ি জঙ্গল টি তে। জঙ্গল এ ঢোকার মুখেই এন্ট্রি fees দিতে হয় যতদিন থাকবে ততদিন র per head হিসেবে। হোটেল আমাদের ঠিক করাই ছিল। Tree of oak life manor। হোটেল টি সুন্দর একটি পুরনো ব্রিটিশ বাংলো তবে ওদের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। কেও আর ওখানে না গেলেই ভালো । বিনসর জঙ্গলে এই এলাকায় শুধুমাত্র 5 খানা বাংলো আছে যেগুলো একসময় এখানকার ট্যাক্স মেজিস্ট্রেট রামসে সাহেব র স্টাফ র জন্য ছিল, উনি নিয়ম করলেন যে কেউ এখানে বাড়ি করতে পারবে না, ওগুলো এখন বেশির ভাগ ভগ্নদশা কিছু আছে সরকারি জঙ্গলের বিভাগ রেস্ট হাউসে ব্যবহার হয়। তবে হোটেল কি খুব সুন্দর তবে খুব এক্সপেন্সিভ। ফরেস্ট area বলে ওখানে electricity নেই। জেনারেটর চলে। তবে ওদের নিজস্ব boiler আছে তাই গরম জল র অসুবিধে নেই। সেদিন টা কোনরকমে কাটিয়ে পরের দিন ভোরে উঠে পরলাম sunrise দেখতে।

ধীরে ধীরে এক অপুর্ব দৃশ্য র স্বাক্ষী হয়ে থাকলাম। চারিদিকে কত নাম না জানা পাখির কিচির মিচির আওয়াজ জানান দিচ্ছে যে সুয্যি মামা র উঠে পড়ার সময় হয়ে উঠেছে। বাতাসে বাতাসে পাইন গাছের শির শির শব্দ যেন গভীর নিস্তব্ধতা ভেদ করতে চাইছে। আহা। কি স্বর্গীয় পরিবেশ। যদি আমার বাকি জীবন টা এই পাহাড়ের নিস্তব্ধতার মধ্যে কাটিয়ে দিতে পারতাম। ধীরে ধীরে পূব আকাশ লাল হতে শুরু হয়েছে। আর দূরে ও কি দেখা যায়। উফফ। কি অপূর্ব কি অপূর্ব সে দৃশ্য। কত নাম না জানা পাহাড়ের চূড়া দেখা যাচ্ছে। আর সূর্যের কিরণ পড়তেই কি অপূর্ব গোল্ডেন রূপ ধারণ করেছে। আহা কি সুন্দর দৃশ্য। কনকনে ঠান্ডা। মুঠো ফোন বলছে ৫ ডিগ্রি। তবু সে ঠান্ডা উপেক্ষা করে আমরা সে দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম। ধীরে ধীরে সূর্যোদয় হলো। লাল গনগনে সূর্য উঠে গেলো যেন দিগন্ত পারাপার হতে। আর পর্বতের চূড়া গুলি বিভিন্ন রূপ কখনো গোল্ডেন কখন লাল আভা তে ধারণ করার পর শ্বেত শুভ্র রূপ ধারণ করে যেন সমস্ত বাধা অতিক্রম করে মাথা উচিয়ে দাড়িয়ে আছে সগর্বে। আমাদের sunrise দেখার পালা শেষ হবার পর ফ্রেশ হয়ে তৈরি হয়ে নিলাম। পরবর্তী গন্তব্য মুন্সিয়ারি। আমার স্বপ্নের পঞ্চ চুল্লি।

 

Piyasa Dasgupta

Share
Published by
Piyasa Dasgupta
  • https://www.banglaexpress.in/ Ocean code:

Recent Posts

সিএএ নিয়ে প্রচারে মনোরঞ্জন, সাবধান করছেন এলাকার

২৪ এর লোকসভা ভোটে রাজ্যে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে সিএএ। বিজেপির পক্ষ থেকে এই নিয়ে…

2 days ago

সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো, বিজেপির পরিকল্পিত চিত্রনাট্য, ভাইরাল ভিডিয়োই দাবি বিজেপি নেতার

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এবার নয়া মোড়। সন্দেশখালি আন্দোলন থেকে শুরু করে যা যা ঘটেছে সম্পূর্ণটাই…

2 days ago

“আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে”- কুনাল ঘোষের গলায় কেন এই গান?

বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দলবিরোধী কথা বলছিলেন। বিশেষ করে…

2 days ago

“সনাতন বিরোধী তৃণমূল”- দৈনিক সংবাদপত্রে বিজেপির বিজ্ঞাপন , প্রচারে ‘ধর্ম’ ব্যবহার করায় কমিশনে তৃণমূল

বিজেপির বিজ্ঞাপনে 'ধর্ম' হাতিয়ার, নির্বাচন কমিশনের নজরে আনল তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট…

2 days ago

বিগত বছরে বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি হয় নি, দাবি WBSEDCL এর

বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে বলে মিথ্যে রটনা শুরু হয়েছে। বিগত বছরে এমন কোন মাশুল বৃদ্ধি…

2 days ago

হেলিকপ্টারে আগুনের ঘটনায় থমকে নেই দেব, শনিবার দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে চুটিয়ে প্রচার

হেলিকপ্টারে হঠাৎ আগুন। বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পান অভিনেতা তথা তৃণমূল প্রার্থী দেব। তবে…

2 days ago
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code: