ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: দুই দশকেরও বেশি আগে দেশের পুঁজিবাজারে ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে লেনদেন চালু হলেও এতদিনে একটি পূর্ণাঙ্গ অটোমেটেড সিস্টেম গড়ে ওঠেনি। ফলে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ৬৫ দিন বন্ধ ছিল দেশের পুঁজিবাজার। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দেশের পুঁজিবাজারকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকেও পুঁজিবাজারের অটোমেশনের বিষয়ে জোর দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি মার্চেন্ট ব্যাংক এশিয়ান টাইগার (এটি) ক্যাপিটালের এক ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের মাধ্যমে পুরোপুরি অটোমেটেড পুঁজিবাজার গড়ে তোলা গেলে আগামী পাঁচ বছরে এখানে ৫০ লাখ নতুন বিনিয়োগকারীকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব বলে এটি ক্যাপিটালের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে নতুন প্রজন্মের বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে অনলাইন ট্রেডিংকে মূল চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের বিনিয়োগকারীরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো ডিজিটাল প্লাটফর্মে অভ্যস্ত। তাদের ব্রোকারেজ হাউজে এসে কিংবা ফোনে অর্ডার করার মতো সময় নেই।
তারা ডিজিটাল মাধ্যমে এক ক্লিকে মিউচুয়াল ফান্ড কিংবা ফিক্সড ইনকাম ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারে। প্রধান শহরগুলোর বাইরে বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ রয়েছে, যেখানে ব্রোকারেজ হাউজগুলো পৌঁছতে পারে না। ট্রাফিক জ্যামের কারণে ফরম পূরণ করা কিংবা লেনদেন করার জন্য ব্রোকারেজ হাউজে আসাটা অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওয়ালেট, পেমেন্ট ও ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ডিজিটাল হওয়ার কারণে ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্টগুলোও ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের মধ্যে আসাটা যৌক্তিক হয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের ক্ষেত্রে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই) সব ব্রোকারের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে, যাতে ব্রোকারেজ হাউজগুলো তাদের নিজস্ব ট্রেডিং সিস্টেম চালু করে এক্সচেঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে। সার্ভার ও ক্লাউডভিত্তিক কাস্টমাইজড অনলাইন ট্রেডিং সিস্টেম চালু করতে হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের বিষয়ে সব স্টেকহোল্ডারকে অবহিত করা; বর্ধিত হারে অনলাইন ট্রেডিং পরিচালনার জন্য এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং প্লাটফর্ম ও সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিসিবিএল) আপগ্রেড করা; প্রত্যেক ব্রোকারকে একটি দক্ষ অনলাইন ট্রেডিং প্লাটফর্ম চালু করা; মোবাইল অ্যাপ চালু করা; ব্লুমবার্গ, চ্যাটবট এবং অন্যান্য মূল্য সংযোজনকে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সবশেষে নতুন গ্রাহক আকৃষ্ট করতে বিপণন কার্যক্রম শুরু করারও কথা বলা হয়েছে। এ রোডম্যাপ অনুসরণ করলে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারে নতুন করে আরো ৫০ লাখ বিনিয়োগকারীকে সম্পৃক্ত করা ও ব্লকচেইনের মতো প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আরো বেশি মূল্য সংযোজন করা সম্ভব হবে বলে প্রতিবেদনে আরো মন্তব্য করা হয়।
২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ হাতে নেয়ার পর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেলেও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে পুঁজিবাজার অনেক পিছিয়ে রয়েছে। পুঁজিবাজারে ২০ লাখের বেশি বিও হিসাবের মধ্যে ডিএসই মোবাইল অ্যাপ ও এর ডেস্কটপ ভার্সনে মাত্র ৫৩ হাজার ব্যবহারকারী রেজিস্টার্ড রয়েছে। অথচ জনসংখ্যার অনুপাতে চীনের মতো একই হারে যদি বাংলাদেশে অনলাইন ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের সংখ্যা হিসাব করা হয় তাহলে এটি ২ কোটিতে দাঁড়াবে। অবশ্য বেশকিছু কারণে দেশের পুঁজিবাজারেও ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন ঘটবে বলে প্রতিবেদনটিতে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের নিয়োগ পাওয়া। তিনি প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন। ডিএসইর পর্ষদ অনলাইন ট্রেডিং ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য করণীয় নির্ধারণে একটি ওয়ার্কিং কমিটি করেছে। ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ বিশ্বের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এক্সচেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাদের অভিজ্ঞতা ও সহায়তা দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজে লাগানো সম্ভব। আর সর্বোপরি দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধির স্বার্থে সব স্টেকহোল্ডারের মধ্যেই পুঁজিবাজারে পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। সম্মিলিতভাবে এসব কারণেই পুঁজিবাজারে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন হবে বলে প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। দেশের পুঁজিবাজারের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, পুঁজিবাজারে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন কতটা প্রয়োজন সেটি কভিড–১৯–এর কারণে সবাই বুঝতে পেরেছেন। একটি পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন সিস্টেমের আওতায় পুঁজিবাজারকে নিয়ে আসতেই হবে। কমিশন এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। স্টক এক্সচেঞ্জকেও এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা পুঁজিবাজার পুরোপুরিভাবে ডিজিটালাইজড করতে চাই।
ডিএসইতে ১৯৯৮ সালে ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে লেনদেন চালু হওয়ার পর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ অটোমেটেড স্টক এক্সচেঞ্জ হিসেবে গড়ে ওঠেনি। অথচ পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের ৯০ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে ডিএসইর মাধ্যমে। ফলে এক্সচেঞ্জটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ এবং বিনিয়োগকারীরাও এখনো অনেকাংশে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে লেনদেনে অভ্যস্ত। ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনূসুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, নতুন প্রজন্মকে পুঁজিবাজারমুখী করতে হলে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের কোনো বিকল্প নেই। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পরই সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টিতে জোর দিয়েছি সেটি হচ্ছে অটোমেশন। আমাদের কৌশলগত বিনিয়োগকারী শেনঝেন–সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জও এক্ষেত্রে আমাদের সহায়তা করতে আগ্রহী। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তা সত্ত্বেও কীভাবে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়িয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ অটোমেটেড স্টক এক্সচেঞ্জ গড়ে তোলা যায়, সে লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More