পশ্চিম মেদিনীপুর:– করোনার থাবায় এবার ফিকে গোয়ালতোড়ের ঘোষ পরিবারের ৩৬৮ বছরের পুরানো পারিবারিক কালী পুজো। বসছে না মেলা, আসছে না আত্মীয়রা। ভক্তদেরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবার যতটা সম্ভব কম উপস্থিত থাকার জন্য৷
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড়ের ধামচা গ্রামের ঘোষ পরিবার। এই ঘোষ পরিবারেই দীর্ঘ ৩৬৮ বছর ধরে শক্তির দেবী মা কালী পূজিতা হয়ে আসছেন৷ সঙ্গতকারণেই ঘোষ পরিবারের সাথে পাশাপাশি গ্রামের মানুষেরাও এই পুজোয় অংশ নেই। দুরদুরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্ত সমাগমও ঘটে পূজোর দিন গুলিতে৷
গোয়ালতোড়ের ধামচা গ্রামের ঘোষ পরিবারের কালী পুজো শুরু করেছিলেন অচিন্ত ঘোষ৷ তাদের আদি বাড়ি ছিল গড়বেতার তেলিবনী গ্রামে। পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, বগড়ির জমিদার কৈলাশ রায়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল এই অচিন্ত রায়ের। তার তিন ছেলে কার্তিক, মহেশ ও গোবিন্দ৷ সেই সম্পর্কের জন্যই অচিন্ত তার ছেলেদের জমিদারের সেরেস্তার কাজে লাগিয়ে দেন ছোট বেলায়।

বিজ্ঞাপন : এখানে বিজ্ঞাপন দিতে , যোগাযোগ : 9733377444
একদিন অচিন্ত ঘোষ গরুর গাড়ি নিয়ে জঙ্গলে গিয়েছিলেন কাঠ আনতে। কাঠ নিয়ে ফিরে আসার সময় মাঝ পথেই হঠাৎ করেই গাড়ির উদল ভেঙ্গে যায়৷ কি করবে এই ভেবেই সেই ব্যাকুল হয়ে মা তারার নাম স্মরণ করতে থাকে। এদিকে সন্ধ্যে হয়ে আসছে। রাস্তায় বিভিন্ন ধরণের বিপদ রয়েছে৷ এমন সময় লাল পাড় সাদা শাড়ি পরা একটি মেয়ে তার কাছে এসে কাঁদতে থাকে৷ আর তাকে বলে যেন সে তাকে নিয়ে যায় তার বাড়িতে। কিন্তু কার মেয়ে কোথা থেকে এই জঙ্গলে আসলো তা বুঝতে পারে না অচিন্ত ঘোষ৷ তাই তাকে নিয়ে যেতে চাইলেন না বাড়িতে। কিন্তু মেয়েটিও নাছোড়বান্দা। তার বাড়িতে যাবেই। অবশেষ যখন অচিন্ত ঘোষ তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে রাজী হয় তখন সেই মেয়েটি মা,কালীর মুর্তি ধরে বলে আমার পুজো কর। তোর মঙ্গল হবে। কিন্তু তখন পুজোর মাত্র বাকি ছিল৷ এই সময়ের মধ্যে কিভাবে পুজো করা সম্ভব? মা তখন তাকে জানায় যে শিলাবতী নদীর বাঁশকোপা দহতে পুজোর দিন সকালে যাবি বলেই মা অদৃশ্য হয়ে যায়৷
দুদিন পর কালী পুজোর দিন সকালে অচিন্ত ঘোষ বাঁশকোপার দহতে গিয়ে দেখেন নদীতে বন্যা এসেছে, আর ওই দহর মাঝে কিছু যেন দেখা যাচ্ছে। মাকে স্মরণ করে দহতে নেমে দেখেন পেল্লায় সাইজের একটি শাঁখ, একটি ঢাক, সহ পুজোর সরঞ্জাম। তা নিয়ে ফিরে এসেই পুজো শুরু করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন
এদিকে জমিদার কৈলাশ রায় তার ছেলেদের গোয়ালতোড়ের ধামচা ও ম্যাটালাতে তাদের মৌজার জমি দেখাশোনার জন্য এখানে পাঠান। কার্তিক, মহেশ ও গোবিন্দ ধামচা তে এসে বসবাস শুরু করেন এবং পারিবারিক কালীকে নিয়ে এসে এখানে প্রতিষ্ঠা করেন। পরে মহেশ ঘোষ জমি দেখাশুনো করার জন্য চলে যান ম্যাটালাতে। সেখানেও তিনি তাদের পারিবারিক কালী পুজো শুরু করেন যা এখনো সমান ঐতিহ্য মেনে পুজো হয়ে আসছে।
ধামচাতে কার্তিক ঘোষের হাত ধরে পুজো শুরু হওয়ার পর মায়ের নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন দুরারোগ্য সহ নিসস্তান মহিলাদের সন্তান প্রসবের ওষুধ দেওয়া হত। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য ভক্তের ভীড় লেগেই থাকতো। এদিকে কলকাতা নিবাসী এক কর্মকার কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে গ্রাম ছাড়া হয়ে চারিদিকে ঘুরতে থাকে রোগমুক্তির জন্য। কিন্তু কোথাও কিছুই হয়নি। তিনি ঘুরতে ঘুরতে এসে পৌঁছান ধামচাতে। তিনি তার সমস্যার কথা জানালে ঈশ্বর ঘোষ তাকে নিকটবর্তী একটি পুকুরে স্নান করতে বলেন। সেই কর্মকার পুকুরে নেমে ডুব দিয়ে উঠতেই রোগ মুক্তি ঘটে মায়ের করুনায়। তারপর তিনি বাড়ি ফিরে মায়ের জন্য একটি দশ কেজি ওজনের কাতান তৈরি করে দেন৷ যার ঔজ্জ্বল্য এখনো বর্তমান।
মায়ের দেওয়া শাঁখ, ঢাক, সহ পুজোর সামগ্রী দিয়েই এখনো মায়ের পুজো করা হয়। আর সেই দশ কেজি ওজনের কাতান দিয়েই বলি দেওয়া হয়। যা ধামচার ঘোষ বাড়ির কালী পুজোর মুল আকর্ষণ।
পরিবারের সদস্য দীপক ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ রা জানান, পুর্বপুরুষের আরম্ভ করা পুজো এখনো সেই নিয়ম নিষ্ঠা সহকারেই মা পুজিতা হন।। তবে এবার করোনার কারনে কমছে জৌলুসতা। বসছে না মেলা, আসছে না দুরদুরান্তের আত্মীয়স্বজন। তবে নিয়ম মেনেই পুজো হবে এবারও।
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More