এগারোটি রাজ্যকে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিল কেন্দ্র

এগারোটি রাজ্যকে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিল কেন্দ্র। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে সব মিলিয়ে এই ১১ রাজ্য নিতে পারবে ১৫ হাজার ৭২১ কোটি টাকা ঋণ। রাজ্যগুলির নিট ঋণ ঊর্ধ্বসীমা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪ শতাংশ। বাজার থেকে অতিরিক্ত ঋণের প্রস্তাব কেন্দ্র দেয় পণ্য ও পরিষেবা করের ঘাটতির কারণে। পণ্য ও পরিষেবা কর আইন অনুযায়ী ঘাটতি মেটানোর দায় কেন্দ্রের সরকারের। কেন্দ্র সেই দায়িত্ব না নেওয়ায় জিএসটি পরিষদে তীব্র বিতর্ক হয় বিরোধী রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে। দায় না নেওয়ার একটি বিকল্প হিসাবে রাজ্যগুলির ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র।

এদিন অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে যে অন্ধ্র প্রদেশ, বিহার, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, কেরালা, মধ্য প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, রাজস্থান এবং উত্তরাখণ্ডকে বাড়তি ঋণের সুবিধা দেওয়া হবে। তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ নেই। চলতি ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে মূলধনী ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল অর্থ মন্ত্রক। রাজ্যভিত্তিক আলাদা করে লক্ষ্যমাত্রা পাঠানো হয়েছিল। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে মূলধনী ব্যয় বাড়িয়ে সেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে এমন রাজ্যগুলিকেই অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রক বলেছে, ‘‘অতিরিক্ত ১৫ হাজার ৭২১ কোটি টাকা এই এগারো রাজ্যের সংযুক্ত অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ০.২৫ শতাংশ। অতিরিক্ত অর্থের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে রাজ্যগুলি মূলধনী ব্যয় আরও বাড়িয়ে নিতে পারে। মূলধনী ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে অর্থনৈতিক গুনক শক্তিশালী প্রভাব ফেলে।

তার ফলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারও বেড়ে যায়।’’ মূলধনী ব্যয় বৃদ্ধির উপযোগিতা মেনে নিলেও একাধিক রাজ্য প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রের ‘অতিরিক্ত অর্থের ব্যবস্থা’ করার দাবি নিয়ে। কেরালা বা পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রীরা বিভিন্ন সময়ে এই বিতর্কে মনে করিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রের দাবির অসারতা। তাদের বক্তব্য, কেন্দ্র সরাসরি রাজ্যগুলিকে অর্থ দিচ্ছে না এই ব্যবস্থায়। এমনকি পণ্য ও পরিষেবা কর বাবদ রাজ্যের প্রাপ্যও মেটাচ্ছে না। তার বদলে নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে। বিনিময়ে নিজের পিঠ নিজেই চাপড়াচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। অর্থ মন্ত্রকের এই ব্যবস্থা অনুযায়ী রাজ্যগুলি মোট নিজেদের উৎপাদনের ০.৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ঋণ বাজার থেকে তুলতে পারবে বছরে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের জন্য এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। ভিত্তি হবে মূলধনী ব্যয়ে বৃদ্ধি। অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে বছরের মোট লক্ষ্যে ১৫ শতাংশ অতিরিক্ত মূলধনী ব্যয় করতে হবে রাজ্যগুলিকে। পরের তিন মাস, জুলাই-সেপ্টেম্বরে করতে হবে ৪৫ শতাংশ। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ৭০ শতাংশ এবং লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে ৩১ মার্চের মধ্যে। মন্ত্রক জানিয়েছে, পরের পর্যালোচনা হবে ডিসেম্বরে। চূড়ান্ত মূল্যায়ন হবে ২০২২’র মার্চে। কম বা বেশি হয়ে থাকলে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সংশোধন হবে।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

কুণাল ঘোষকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দিল রাজনীতির অবসান বা শুরু?

রাজনীতির সময়ে অনেক সময় আসে যখন সাধারণভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর কাছে এক পদ দিয়ে দেওয়া…

2 days ago

রজনীকান্ত এবার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন

তিনি ভারতীয় তামিল চলচ্চিত্রের মহাতারকা রজনীকান্ত। শুধু তামিল ভাষাতেই হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় ও ইংরেজি ভাষার…

2 days ago

নির্মাতা অনিরুদ্ধ’র আরেকটি ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন জয়া

কলকাতার নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত ‘কড়ক সিং’ নামের হিন্দি ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশী…

2 days ago

বলিউড ডিভা শিল্পা শেঠির সম্পত্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি: সন্তানসহ মুম্বাই ছেড়ে প্রত্যাবর্তন

বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রা তার আর্থিক মুদ্রার এক ধারালো নিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি…

2 days ago

পাওলি দাম: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র এক নতুন প্রতিভার আবির্ভাব

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শৃঙ্খলা সম্পর্কে আলোচনা করা যেতে পারে অল্প বা মাঝামাঝি হয়ে যাওয়া একটি বিষয়।…

2 days ago

কুরুচিকর ভাষার প্রতিযোগিতা বন্ধে কমিশনের চিঠি প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলিকে

দেশ জুড়ে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় বইছে। সেই সঙ্গে সমানতালে চলছে একে অপরকে আক্রমণের পালা। পক্ষ…

2 days ago
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code: