রামিজ ইউসুফ : জাকারিয়া স্ট্রিট নাম শুনছেন? শুনে থাকলে আলবাত আপনার স্বাদকোরক এতক্ষণে উজ্জীবিত। আর না শুনলে “কুছ পরোয়া নহি” ,কারন আজ আপনাদের মধ্য কলকাতার সেই খাবারের সঙ্গে পরিচয় করাবো। জাকারিয়া প্রবেশর মুখে পড়ে নাখোদা মসজিদের সুদর্শন তোরণ যা থেকে দু মিনিটের হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন আপনার গন্তব্যে। জাকারিয়ার এই ফুড স্ট্রিট এর বিস্তৃতি যদিও খুব বেশি নয়। কিন্ত খাবারের বৈচিত্র্যে ও ব্যপকত্বে এর জুড়ি মেলা ভার। রমজান পড়তেই নাখোদা মসজিদের দুই ধারে সুস্বাদু খাবারে সুসজ্জিত হয়ে এই জাকারিয়া।
রমজান মাসে এই জাকারিয়া যেন সুস্বাদু খাবারের স্বর্গ। আর এই রমজান মাসের পুরোটা জুড়ে ফুডি বাঙালির রসনা নিবারণের কেন্দ্র হয়ে ওঠে চিতপুরের এই খাবারের ঠেক। ঢুকে পড়েই দুই পথ বরাবর হাঁটতে শুরু করলে হরেক কিসিমের খাবারের সুগন্ধ সিধা আপনার নাকে আসতে শুরু করবে।প্রথমেই মিলবে বাখরখানি। দুধারে পরপর থাকে থাকে সাজানো। একটু পেরিয়েই দর্শন মিলবে সুস্বাদু ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা যা ঈদের দিন প্রতিটি ঘরেই বানানো হয়। সাথে পাবেন সিমুই, যার সাথে আমরা মোটামুটি সবাই পরিচিত। একটু এগোলেই নজরে পড়বে সুতো দিয়ে শিকের গায়ে জড়িয়ে রাখা হয় মিহি কিমা, কাবাবের নাম – সুতি কাবাব !!
মোড় ঘুরলেই একটি দোকান আছে পাবেন যেখানে পাবেন চিকেন ভাজা যার পোশাকি নাম ‘চিকেন টাঙরেজী’ !! আর পাবেন জিভে জল আনা যাবেন “মাহি আকবরী’ বা এক অদ্ভুত মাছ ভাজা। মশলায় মাখানো বিভিন্ন সাইজের কাঁচা মাছের টুকরো আলাদা করে বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। নিজের পছন্দ করে পিস্ অর্ডার দিন আর দোকানদার আপনার সামনেই ভেজে দেবেন ছাঁকা তেলে ! কাতলা মাছের পাশাপাশি জায়গায় চিংড়ি ভাজাও জায়গা করে নিয়েছে এখানে। এছাড়াও মুরগির হাজার পদ বিক্রি হচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে নতুন একটি পদ মালাই চিকেন ।কথা বলে জানলাম এরও নাকি ভালো চাহিদা এখানে।
আর যারা ভাজাভুজি পছন্দ করেন তাদের জন্য রমজানের জাকারিয়া একরকম আদর্শ। চপ, পেঁয়াজি, বেগুনি, সামোসা ছাড়াও বাদাম চিঁড়েমশলা আপনাকে একবার টানবেই। এছাড়া পাওয়া যায় নানান ধরনের ভাজাভুজি। রমজানের ইফতারের পাতে সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়ে থাকে নানান ধরনের ফল। আর এই ফলের মেলা দেখতে হলে আপনাকে এখানে আসতেই হবে।খেজুর, আনারস, আম, তরমুজ, পেঁপেঁ, বেল, আঙুর, আপেল, কোনটা ছেড়ে কোনটি বলি। মনে হয় শুধু পাতে পড়ার অপেক্ষা। যাই হোক ইফতারের আগে রোজদাররা ভিড় জমান নিজেদের মতো করে খাবারের খোঁজে। আর কিছুক্ষণ পরই যে ইফতার আলো ধীরে ধীরে কমে আসো। পাশে বিকেলের আলোয় মায়াবী হয়ে ওঠা নাখোদা মসজিদের আজান জানান দেয় রোজা ভাঙার।