‘এগিয়ে বাংলা’ য় পৌর এলাকাতেই ভরসা পাতকুয়োই

নিজস্ব সংবাদদাতা : একুশ শতকের ভারতের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামও যখন নলবাহিত পানীয়জলের জন্য তৈরী হচ্ছে তখন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ‘এগিয়ে বাংলা’ র পৌরসভায় ভরসা পাতকুয়ো! না , এ পৌরসভা আবার এমনটা নয় যে সে সদ্য পঞ্চায়েতের তকমা কাটিয়ে উঠেছে। ১৫০ বছর অতিক্রান্ত এই পৌরসভার নাম মেদিনীপুর পৌরসভা। খোদ জেলা শহরের এই পৌরসভার এক অংশের নাগরিকদের ভরসা এখন পাতকুয়োই। কারন গত চার মাস ধরে অকেজো পৌরসভার এই অংশের জল সরবরাহ ব্যবস্থা।

পৌরসভার ২২নম্বর ওয়ার্ড বা অরবিন্দনগরের এই বাসিন্দারা আবার জেলা আদালতের প্রায় গাঘেঁষেই অবস্থান করেন। ১২টি পরিবারের প্রায় ৮০জন সদস্যের আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্য দিনের জলের ব্যবহার । পৌরসভার জল সরবরাহ ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ায় ১৮ থেকে ৮০ সবাইকেই টানতে হয় পাতকুয়োর দড়ি। ৬০ থেকে ৮০ফুট নীচে থেকেই জল টেনে উপরে এনে ব্যবহার দিনের সর্বাধিক দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারন নাগরিকদের। কলেজ পড়ুয়া অর্পিতা ভট্টাচার্য্য জানালেন , বারংবার ছুটে যাওয়া হয়েছে এলাকার কাউন্সিলার , জলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপারিষদ সদস্যা কিংবা পুরসভাতেও কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আজ বলে পাম্প পুড়ে গেছে , কাল বলে জলের পাইপ ফেটে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

৮০ বছরের কমলা ঘোষ জানালেন , পাতকুয়োর জল তুলে সমস্ত কাজ করতে হয় আমাকে কিংবা আমার বৌমাকেই। এত নীচে জল যে কাজের মেয়েও জল তুলে কাজ করতে চায়না । এদিকে এই জল ব্যবহার করায় শরীর খারাপ হচ্ছে। কোনওই ভ্রুক্ষেপ নেই পৌরসভার। স্থানীয় কাউন্সিলার রাধারানী বেরা বলেন , এটা মূল পাম্পের সমস্যা আমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। জলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্যা মৌ রায় বলেন , বারবার পাম্প পুড়ে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আমরা দেখছি।

পুরসভার একটি সুত্রে জানা গেছে ওই এলাকায় তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দের প্রতিফলন এই সমস্যা। কাউন্সিলরের বিরোধী গোষ্ঠির কলকাঠিতে উন্নয়নের সমস্যা হচ্ছে । উদ্দেশ্যে কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরী করা যাতে প্রায় ঘোষিত হতে যাওয়া পুরনির্বাচনে টিকিট না পান তিনি। এলাকার এক মহিলা জানালেন, এই এলাকায় পুরকরের পরিমান সব চেয়ে বেশী। তাও অবহেলিত এই এলাকা । দিনের বেশির ভাগ সময় যদি জল তুলতেই চলে যায় তবে বাকি কাজ করব কখন। তাছাড়া জল তুলতে তুলতে শরীর ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে আর এই জল খাওয়াও নিরাপদ নয় ! এই নাকি দিদির এগিয়ে থাকা বাংলা ?

Susmita Sarkar

Share
Published by
Susmita Sarkar

Recent Posts

কুণাল ঘোষকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দিল রাজনীতির অবসান বা শুরু?

রাজনীতির সময়ে অনেক সময় আসে যখন সাধারণভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর কাছে এক পদ দিয়ে দেওয়া…

19 hours ago

রজনীকান্ত এবার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন

তিনি ভারতীয় তামিল চলচ্চিত্রের মহাতারকা রজনীকান্ত। শুধু তামিল ভাষাতেই হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় ও ইংরেজি ভাষার…

24 hours ago

নির্মাতা অনিরুদ্ধ’র আরেকটি ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন জয়া

কলকাতার নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত ‘কড়ক সিং’ নামের হিন্দি ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশী…

24 hours ago

বলিউড ডিভা শিল্পা শেঠির সম্পত্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি: সন্তানসহ মুম্বাই ছেড়ে প্রত্যাবর্তন

বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রা তার আর্থিক মুদ্রার এক ধারালো নিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি…

1 day ago

পাওলি দাম: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র এক নতুন প্রতিভার আবির্ভাব

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শৃঙ্খলা সম্পর্কে আলোচনা করা যেতে পারে অল্প বা মাঝামাঝি হয়ে যাওয়া একটি বিষয়।…

1 day ago

কুরুচিকর ভাষার প্রতিযোগিতা বন্ধে কমিশনের চিঠি প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলিকে

দেশ জুড়ে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় বইছে। সেই সঙ্গে সমানতালে চলছে একে অপরকে আক্রমণের পালা। পক্ষ…

1 day ago
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code: