Categories: ভ্রমণ

দুদিনের জন্য পুরুলিয়া

হিমিকা সিনহা চৌধুরী : দীর্ঘদিনের lockdown এর পর গৃহবন্দি একঘেয়ে জীবন থেকে একটু সবুজ প্রকৃতির মধ্যে মুক্তি পেতে হঠাৎ plan হলো দুদিনের জন্য পুরুলিয়া গেলে কেমন হয়। পুরুলিয়ার বেশি খানিকটা অংশই ছোটনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত , তাই চারিদিকে পাহাড়, ঝর্না, জঙ্গল, নদী আর মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ ঘেরা এক অপূর্ব জায়গা এই জেলা।

যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। Book করা হলো একটি Tata Sumo গাড়ি আর থাকার জন্য ঠিক হলো Matha Forest Resort। ইচ্ছা আছে কোনো একদিন উচুঁ পাহাড় ঘেরা কোনো এক উপত্যকায় Tent এ রাত কাটাব। তাই দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে আর ইঁটের চার দেওয়ালের boredom কাটাতে এই resort টি কেই বেছে নিলুম। ঠিক বাঘমুন্ডি পাহাড়ের কোলে জঙ্গলের মধ্যে এই অপূর্ব Resort। রাতের বেলা হাতির ডাক, ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ আর তার সাথে মিষ্টি ঠান্ডা হাওয়ায় tent দোলা দুটো রাত ভোলার মতো নয়। মাত্র একটি দিন ছিল আমাদের ঘোড়ার জন্য তাই সকাল সকাল breakfast করেই বেরিয়ে পড়লাম অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে।

ছবি – হিমিকা সিনহা চৌধুরী

প্রথমেই দেখলাম Lower Dam । বামনিঝোরাকে বাঁধ দিয়েই তৈরি হয়েছে এই ড্যাম। উঁচু পাহাড় থেকে নিচে চোখ যেতেই দেখি একদিকে আকাশের মতো নীল জল অন্য দিকে রাস্তা।

আরও একটু উপরে উঠে পৌঁছলাম Upper Dam এ। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ড্যামের জলের রংও আকাশের মতোই উজ্জ্বল নীল। তারপর আরো উপরে গেলাম ময়ূর পাহাড় দেখতে। অযোধ্যা পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু টিলা এটি। এখানে পাহাড় থেকে নিচের ছবির মত সুন্দর সাজানো গ্রাম আর সবুজ কে উপভোগ করে আমরা বামনি Falls এর দিকে রওনা হলাম । সেখানে প্রায় তিন ধাপে উপর থেকে খাঁড়া পাথরের খাঁজ বেয়ে পাহাড়ের শরীর কেটে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অশান্ত বামনি। তারপর Lunch করে, গ্রামের মধ্যে দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে গেলাম টুর্গা Dam।

ছবি – হিমিকা সিনহা চৌধুরী

এর পর গাড়ি থামল একটা ছোটোখাটো গ্রামের মাঝখানে। নাম চড়িদা। মাঝখানে সরু রাস্তা আর দুই পাশে ছোটছোট দোকানে থরে থরে সাজানো নানা বেশের মুখোশ। কাগজের মণ্ড, বিভিন্ন রং আর আঠা দিয়ে রংবেরঙের মুখোশ বানাচ্ছেন কারিগররা। পুরুলিয়ার জনপ্রিয় ছৌ-নাচের মুখোশের পাশাপাশি রয়েছে কথাকলি ঢঙের নর্তকের মুখ, দু্র্গা, অসুর, গণেশ, আবার রয়েছে সাঁওতাল বর-বউয়ের আদলও। এখানে অনেকটা সময় কাটিয়ে গেলাম খয়রাবেড়া হ্রদ। একদিকে সূর্যাস্ত অন্যদিকে পাহাড় ঘেরা হ্রদে নরম কমলা সূর্যাস্তের আলো। হ্রদের সামনে দাঁড়িয়ে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছিলো। এই মনোময় পরিবেশ ফেলে resort ফিরে যেতে কিছুতেই ইচ্ছা করছিলো না।

ছবি – হিমিকা সিনহা চৌধুরী

যাইহোক সন্ধ্যে ঝুপ করে নামতেই ফিরে এলাম সেই সুন্দর resort এ শেষ রাত টুকু উপভোগ করার জন্য। কারণ পরের দিন ই আবার ফেরার পালা।
যাইহোক পুরুলিয়ার trip এর কিছু মুহূর্ত share করলাম নিচে। আশা করি সবারির ভালো লাগবে।

admin

Share
Published by
admin
  • https://www.banglaexpress.in/ Ocean code:

Recent Posts

কুণাল ঘোষকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দিল রাজনীতির অবসান বা শুরু?

রাজনীতির সময়ে অনেক সময় আসে যখন সাধারণভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর কাছে এক পদ দিয়ে দেওয়া…

2 days ago

রজনীকান্ত এবার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন

তিনি ভারতীয় তামিল চলচ্চিত্রের মহাতারকা রজনীকান্ত। শুধু তামিল ভাষাতেই হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় ও ইংরেজি ভাষার…

2 days ago

নির্মাতা অনিরুদ্ধ’র আরেকটি ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন জয়া

কলকাতার নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত ‘কড়ক সিং’ নামের হিন্দি ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশী…

2 days ago

বলিউড ডিভা শিল্পা শেঠির সম্পত্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি: সন্তানসহ মুম্বাই ছেড়ে প্রত্যাবর্তন

বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রা তার আর্থিক মুদ্রার এক ধারালো নিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তি…

2 days ago

পাওলি দাম: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র এক নতুন প্রতিভার আবির্ভাব

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শৃঙ্খলা সম্পর্কে আলোচনা করা যেতে পারে অল্প বা মাঝামাঝি হয়ে যাওয়া একটি বিষয়।…

2 days ago

কুরুচিকর ভাষার প্রতিযোগিতা বন্ধে কমিশনের চিঠি প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলিকে

দেশ জুড়ে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় বইছে। সেই সঙ্গে সমানতালে চলছে একে অপরকে আক্রমণের পালা। পক্ষ…

2 days ago
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code: