রাম মন্দির উদ্বোধন বনাম সংহতি যাত্রা – সুর চড়ছে বঙ্গ-রাজনীতিতে

একমাত্র রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিনেই বড় কর্মসূচি। যখন অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন করবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই সময় এই বাংলায় পথে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার রাজপথে আওয়াজ তুলবেন সংহতির। অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচিকে একেবারেই পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে দেখানো হচ্ছে না। তবে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল-মহল বলছে একেবারেই পালটা কর্মসূচি হতে চলেছে মহানগরীর বুকে। মোদি বনাম মমতার টক্কর হতে চলেছে ২২ জানুয়ারি। অনেক চেষ্টা করেছিল বাংলার রাজনীতিতে সিংহাসন দখলের। ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ। এই চেষ্টা বিফলে যাযায়। তার যে বিধানসভা ভোটে তিন অঙ্কের গণ্ডি পেরোতে পারিনি বিজেপি। দ্বিতীয়বারের জন্য নবান্নের কুরসি দখল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পায়ের তলের জমি ক্রমশ হারাতে থাকে। বেশ কয়েকজন বিধায়ক নাম লেখান ঘাসফুল শিবিরে। বিজেপির একাধিক নেতাকর্মী দলবদল করেন।

তবে বঙ্গের জমি দখলের চেষ্টা থেকে সরে আসেনি গেরুয়া শিবির। এবার রাম মন্দির ই সুখে হাতিয়ার করে পুনরায় জমি দখলের প্রচেষ্টা শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স স্যান্ডেল লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষের রামের প্রতি ভক্তির কথা। প্রধানমন্ত্রীর কথায় উঠে এসেছে বাংলার কথা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপি কর্মীরা রামের ছবি পৌঁছে দিয়েছেন। ঐদিন প্রতি বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন করেছেন। রাজ্যের সর্বত্রই রাম মন্দির উদ্বোধনের প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। ধর্মের মোড়কে মোরে বাংলার মাটিতে পদ্মফুল ফোটানোর আবার নতুন চেষ্টা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে।

পোড় খাওয়ার রাজনীতিবিদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিভাবে নিজের জমি ধরে রাখতে হয় তা মমতা ছাড়া বোধহয় ভারতীয় রাজনীতিতে বোঝার ক্ষমতা কারোর নেই । আর তাই বিজেপির চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস একমাত্র মমতারই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভয়ে যখন দেশের একাধিক দলের প্রথম সারির নেতা-নেত্রীরা অনেকটাই নীরব থাকেন তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে চড়া কথা বলেন। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন কোনভাবেই নরেন্দ্র মোদিকে একা ময়দান ছেড়ে দিতে চান না মমতা। শুধু মাঠ জুড়ে মোদি খেলবেন কখনোই তা করতে দেবেন না তৃণমূল সুপ্রিমো। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে তাই ওই দিনই তৃণমূল কংগ্রেসের সংহতি যাত্রা কর্মসূচি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে পুজো দেবেন। যাবেন গির্জা গুরুদোয়ারাতেও। আর তারপর হাজরা মোড় থেকে মিছিল করে পৌঁছাবেন পার্ক সার্কাসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্ক সার্কাসের ময়দানে হাজার হাজার মানুষের সামনে বক্তব্য রাখবেন। স্বাভাবিকভাবেই বাংলার মিডিয়া ঐদিন মোদী ও মমতাকে ভাগাভাগি করে নেবে। অর্থাৎ একা সমস্ত প্রচার কেড়ে নিতে পারবেন না দেশের প্রধানমন্ত্রী। লড়াই হাড্ডাহাড্ডি।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

সিএএ নিয়ে প্রচারে মনোরঞ্জন, সাবধান করছেন এলাকার

২৪ এর লোকসভা ভোটে রাজ্যে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে সিএএ। বিজেপির পক্ষ থেকে এই নিয়ে…

1 week ago

সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো, বিজেপির পরিকল্পিত চিত্রনাট্য, ভাইরাল ভিডিয়োই দাবি বিজেপি নেতার

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এবার নয়া মোড়। সন্দেশখালি আন্দোলন থেকে শুরু করে যা যা ঘটেছে সম্পূর্ণটাই…

1 week ago

“আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে”- কুনাল ঘোষের গলায় কেন এই গান?

বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দলবিরোধী কথা বলছিলেন। বিশেষ করে…

1 week ago

“সনাতন বিরোধী তৃণমূল”- দৈনিক সংবাদপত্রে বিজেপির বিজ্ঞাপন , প্রচারে ‘ধর্ম’ ব্যবহার করায় কমিশনে তৃণমূল

বিজেপির বিজ্ঞাপনে 'ধর্ম' হাতিয়ার, নির্বাচন কমিশনের নজরে আনল তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট…

1 week ago

বিগত বছরে বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি হয় নি, দাবি WBSEDCL এর

বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে বলে মিথ্যে রটনা শুরু হয়েছে। বিগত বছরে এমন কোন মাশুল বৃদ্ধি…

1 week ago

হেলিকপ্টারে আগুনের ঘটনায় থমকে নেই দেব, শনিবার দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে চুটিয়ে প্রচার

হেলিকপ্টারে হঠাৎ আগুন। বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পান অভিনেতা তথা তৃণমূল প্রার্থী দেব। তবে…

1 week ago
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code: