ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এ প্রভাব কদিন থাকবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। দেশের অর্থনীতির ৮০ শতাংশের জোগানদাতা চট্টগ্রাম বন্দর। করোনার ধাক্কায় চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে এরই মধ্যে রফতানি কমে গেছে। বন্দরে জাহাজ আসার পরিমাণও কমছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের কিছু বিদেশি এজেন্ট চীনের সঙ্গে চট্টগ্রামে বন্দরে সরাসরি জাহাজযোগে পণ্য আনা–নেওয়া করে। এসব জাহাজ এখন বন্দরে এলে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণে থাকছে। যার ফলে জাহাজ আসা থেকে পণ্য খালাস পর্যন্ত বড় একটি সময়ের অপচয় হচ্ছে। এ কারণে ব্যবসা–বাণিজ্য ক্ষতির সম্মুখীন। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস শুরুর আগে যেসব জাহাজ বিদেশ থেকে পণ্য এনেছে, তাতে দেশের আমদানির চিত্র স্বাভাবিক থাকলেও কমে গেছে রফতানি।
বিশেষ করে চীন থেকে গার্মেন্টের বিপুল কাঁচামাল চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হয়। ব্যবসায়ীরা আগে–ভাগে কিছু সময় হাতে রেখে এসব পণ্য আমদানি করে রাখেন। তবে আমদানি করা কাঁচামাল দিয়ে রফতানিযোগ্য পণ্য সময়মতো জাহাজীকরণ হচ্ছে না। ফলে বছরের শেষে এবং নতুন বছরের শুরুতে কমে যাচ্ছে রফতানি। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০১৮–১৯ অর্থবছরে ৮ কোটি ২৯ লাখ ৩৯ হাজার ৭৩১ টন পণ্য এসেছে, যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। কিন্তু রফতানি হয়েছে ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৪০৬ টন। গত বছর যেখানে রফতানির পরিমাণ ছিল ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার ৪৬৫ টন। গত বছরের শেষের দিকে এসে করোনার ধাক্কায় রফতানি দেড় লাখ টনেরও বেশি কমে গেছে। একই সঙ্গে কমেছে জাহাজ আসার পরিমাণও। প্রতি মাসে যেখানে গড়ে ৩৬০টি জাহাজ আসত, তা সাড়ে তিনশোর নিচে নেমে গেছে। এ বিষয়ে আলাপকালে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘জাহাজ আসা বা আমদানি–রফতানির বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে। চীনের করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি ক্ষতি হচ্ছে।
এখানে চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু করার নেই। সাধারণত করোনাভাইরাসের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর সতর্কতামূলক যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা অর্থনীতির ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই।’ দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে চট্টগ্রামের শিপিং ব্যবসায়ী আতাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, চীনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত আলাপ হচ্ছে। চীন থেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি শুরু হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫টি বন্দরের মাধ্যমে পণ্য রফতানি হচ্ছে। চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে গেছে। তারা এটি কনট্রোলে নিয়ে আসছে। আতাউল করিম বলেন, যদি চট্টগ্রাম বন্দরে চীনের কোনো জাহাজ ১৪–১৫ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকে, তাহলে অর্থনীতিতে এর একটি পড়বে। কারণ চীন থেকে পণ্য আনতে ১৩–১৪ দিন লেগে যায়। তার মধ্যে এত দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকলে এটি ৩০ দিনে গড়াবে। ফলে একটি জট লেগে যাবে। যাতে পোশাকশিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে।’ অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৫ শতাংশেরও বেশি চীন থেকে আসে। গত অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ছিল প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময় আমদানি ছিল ৮৩ কোটি ডলার। আমদানি–রফতানির সিংহভাগই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসে।
চীনের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি জাহাজ যোগাযোগ করছে কয়েকটি বিদেশি এজেন্ট। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মার্কস লাইন। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি–রফতানির বেশির ভাগই বিদেশি মার্কস লাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এদের সঙ্গে সক্রিয় আছে অপর বিদেশি এজেন্ট হুনদাই। করোনাভাইরাসের পর থেকে জাহাজের সংখ্যা কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে আসতে পারে, এ আশঙ্কায় বিদেশি জাহাজ প্রবেশের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিদেশি জাহাজের নাবিক, ক্রু থেকে শুরু করে যেসব লোকজন রয়েছে, তারা যাতে পরীক্ষা ছাড়া কোনো ধরনের চট্টগ্রাম বন্দরসীমায় প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে সার্বক্ষণিক সি অ্যাম্বুলেন্স ও মেডিকেল টিমকে সক্রিয় রাখা হয়েছে। বিদেশি জাহাজ মালিক এবং সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে, কোনো বিদেশি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে জাহাজের মাস্টারকে নিশ্চিত করতে হবে জাহাজে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো নাবিক বা ক্রু নেই।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করবে। বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কর্তৃক স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ভাইরাসমুক্ত ও নিরাপদ ঘোষণা করলেই ওইসব জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের অনুমতি পাবে। এদিকে করোনাভাইরাসে বাংলাদেশের অর্থনীতির ১৪টি সেক্টরে নেতিবাচক সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে ব্যবসায়ী সূত্র জানায়। চট্টগ্রাম বিজিএমইএর চট্টগ্রামের প্রথম সহসভাপতি এম এ সালাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমরা আমাদের বক্তব্য এরই মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের বরাবর তুলে ধরেছি। করোনার প্রভাবে সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রযোজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।’ ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার প্রভাবে আমদানি–রফতানি কমে যাওয়ায় প্রাথমিক হিসেবে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে। কাঁচামালের অভাবে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বিঘ্নি হচ্ছে। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান মূলত চীনা কাঁচামালনির্ভর। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন এক প্রতিবেদনে বলেছে, তৈরি পোশাক, চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, প্রসাধন, বৈদ্যুতিক পণ্য, কম্পিউটার, পাট সুতা, মুদ্রণশিল্প, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ইলেকট্রনিকস পণ্য, কাঁকড়া, কুঁচে, চশমাসহ বিভিন্ন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More