মানবাধিকার অবহেলিত জাতিসংঘের !


রবিবার,২৩/০৮/২০১৫
849

  খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ   জাতিসংঘের অভ্যন্তরের মানবাধিকার নিয়ে। সংস্থাটিতে ইন্টার্ন করা শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না কোনোরকম শিক্ষানবিশ ভাতা। আর এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ শিক্ষানবিশরাই। তারা বলছে, খোদ এই সংস্থার অভ্যন্তরে সার্বজনীন মানবাধিকার প্রশ্নটি উপেক্ষিত হয়। জাতিসংঘের এমন অবস্থানের কারণ এবং শিক্ষানবিশের আন্দোলন কতটা যৌক্তিক সেটা নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনোমিস্ট। প্রতিবেদনে নিউজিল্যান্ড থেকে আসা ২২ বছর বয়সী ডেভিড হাইড এর কথা তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘে কাজ করতে এসে তাকে জেনেভা লেকের পাশে একটি তাঁবু টাঙিয়ে থাকতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ফ্রি তে কাজ করে হোটেল ভাড়া দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব না।

Affiliate Link কলকাতার খবর | Kolkata News

তার এই ঘটনা শোনার পর নড়েচড়ে বসেছে সবাই। ১৪ আগস্ট হাইড তার সহকর্মীদের নিয়ে এক আন্দোলনে নামেন। সেদিনই জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনের কাছে এক খোলা চিঠিতে তারা প্রশ্ন তোলেন, জাতিসংঘের ঘোষিত মানবাধিকার সনদের ২৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে যে যিনি কাজ করবেন তাকে অবশ্যই সম্মানী বা পারিশ্রমিক দিতে হবে

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা ইন্টার্নদের ভাতা দিতে চায়। কিন্তু নিয়মের কারণে তাদের হাত বাঁধা। ১৯৯৭ সালে পাস হওয়া একটি প্রস্তাবনায় বলা হয় যে জাতিসংঘের নিজস্ব স্টাফ ছাড়া কাউকে বেতন দেওয়া যাবে না। কয়েক দশক ধরেই সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছেন অনেক ইন্টার্ন। ১৯৯৭ সালের প্রস্তাবনা পাস হওয়ার পর ইন্টার্নের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। ১৯৯৬ সালে যেই সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩১। ২০১৪ সালে সেটি ৪ হাজারেরও বেশি।

ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, জাতিসংঘ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থাকলেও তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের জন্য তাদের দরজা খোলা রেখেছে। তারা কোনো টাকা না দিলেও বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে আগ্রহী অনেক শিক্ষার্থী। দুই থেকে ছয় মাসের ইন্টার্নশিপে তাদের অনেক কিছু শেখার থাকে। ইন্টার্নশিপ করা শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও তারা অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং তাদের সিভিতে জাতিসংঘের কাজ করার অভিজ্ঞতা যোগ করতে পারে। যদি জাতিসংঘের তাদের শিক্ষানবিশদের ভাতা দিতেও চায় তবে বেশ বড় আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এতে করে তাদের বার্ষিক খরচ বৃদ্ধি পাবে প্রায় ১৪.৫ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া জাতিসংঘের কাছে ১.৩ বিলিয়ন ডলার পায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া জাতিসংঘের স্টাফদের সংগঠনগুলোও চায় না যে ইন্টার্নদের টাকা দেওয়া হোক। তাদের আশঙ্কা এতে করে তাদেরকে নিজস্ব স্টাফ হিসাবে নিয়োগ করা হতে পারে যাতে করে যোগ্য লোকের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, এতে করে স্বজনপ্রীতি বৃদ্ধি পেতে পারে কারণ ইন্টার্ন মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্টাফ মনোনয়নের মতো কঠোরও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় না।

ইন্টার্নদের ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি প্রতিবন্ধকতা হলো এর প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের নিয়োগ। প্রত্যেক সদস্য দেশই চায় জাতিসংঘের তাদের নিজস্ব নাগরিকদের নিয়োগের মাধ্যমে প্রভাব বৃদ্ধি করতে। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো থেকেই বেশি ইন্টার্ন নেওয়া হয়। সংখ্যায় যেটা ৬১ শতাংশ। অথচ জনসংখ্যার বিচারে তারা বিশ্বজনগোষ্ঠীর ১৫ শতাংশ। এখন ইন্টার্নদের ভাতা দেওয়া হলে সবাই একটি জিওগ্রাফিকাল কোটা ব্যবস্থার প্রস্তাব দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে যেটা উন্নত দেশগুলো বিরোধিতা করবে। অন্যদিকে ইন্টার্নদের বেতন না দিয়ে জাতিসংঘের সাময়িক লাভ হলেও ক্ষতি হচ্ছে অন্যভাবে। সংস্থাটির সিনিয়র ম্যানেজাররা বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই মেধাবীরা বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে চায় না। তাই প্রায় দক্ষ মাথার অভাব ঘটছে।

Affiliate Link Earn Money from IndiaMART Affiliate

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট