গাছকে বাঁচাতে কালিয়াগঞ্জে বট পাকুরের বিয়ে


সোমবার,০৭/১২/২০১৫
645

বিকাশ সাহাঃ    “একটি গাছ একটি প্রাণ” এই বানী গ্রামবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে রবিবার রাতে কালিয়াগঞ্জের মুস্তফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হাটকালিয়াগঞ্জে ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হল বট গাছের সঙ্গে পাকুড় গাছের । আর পাঁচটা বিয়ের মতই নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে এদিন হাটকালিয়াগঞ্জে বট গাছ ও পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজন করা করা হয়। বিয়ে উপলক্ষে এদিন সকাল থেকেই গ্রামের মহিলারা নতুন কাপড় পড়ে সেজেগুজে জল ভরতে বেড়িয়ে পড়েন। পুকুর থেকে ঘটে করে জল ভরেন। রীতিমতো মহিলাদের সাথে সাথে বাজনা বাজিয়ে গোটা গ্রাম মাতিয়ে দেন বাদ্যিকাররা। মহিলাদের সাথে ছেলেপুলেরাও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। সকালে পুকুর থেকে ঘটে জল ভরে আনার সময় কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে গ্রাম পূজা। গ্রাম পূজার মধ্য দিয়ে গ্রামের মহিলারা গ্রামের প্রতিটি পূজা মণ্ডপে গিয়ে পান, সুপারি, মিষ্টি, কলা দিয়ে পূজো করে ফিরে আসেন বট পাকুড় গাছের তোলায়। মহিলাদের নিয়ে হলুদ কোটার আয়োজন সম্পূর্ণ করা হয় দুপুরের মধ্যে। এরপর চলে নারায়ণ পূজা সহ বিয়ের আগের নানা রীতি রেওয়াজ। পাকুড় গাছকে শাড়ি পড়িয়ে টোপর মাথায় দিয়ে কোণে রূপে সাজানো হয়। সেই সঙ্গে টোপর মাথায় দিয়ে ধুতি পাঞ্জাবী পড়িয়ে বট গাছকে বর সাজানো হয়। বিকেল থেকেই গ্রামের আবাল বৃদ্ধ বণিতা বট পাকুড়ের বিয়ে দেখতে ভিড় করতে থাকেন। রীতি নিয়ম মেনে সন্ধ্যা লগ্নে শুরু হয় বিয়ে। বিবাহের শুভ লগ্নে হাজির হন পুরোহিত। কয়েকশ গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে মন্ত্রাচারণের মধ্য দিয়ে সন্ধ্যা নাগাত শুরু হয় বট গাছ ও পাকুড় গাছের বিয়ে। শঙ্খধনি ও উলুধ্বনি মধ্য দিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই বিয়ে। বিয়ে শেষে সিঁদুর দান ও যজ্ঞানুষ্ঠান করে বিবাহের সমাপ্তি ঘটে। বিয়ের শেষে পাত পেড়ে খেলেন কয়েকশ গ্রামবাসী। এদিনের খাবারে ছিল পাটভাজা, ডাল, তরকারী, মাছের ঝোল, শেষ পাতে চাটনি ও মিষ্টান্ন।
বিয়ের মূল উদ্যোক্তা নিখিল সাহা বলেন, গাছ বাঁচানোর প্রয়াসে আজ আমরা বট পাকুড়ের বিবাহের উদ্যোগ নিয়েছি। “একটি গাছ একটি প্রাণ” গাছকে নিজের সন্তানের মতো আমরা যেন সবাই দেখি। কোথাও গাছ কাটা দেখলে আমাদের সকলে মিলে প্রতিবাদ গড়ে তোলা প্রয়োজন। বট গাছ ও পাকুড় গাছের বিবাহের মধ্য দিয়ে সবুজায়নের এই মহান প্রয়াসে এগিয়ে এসেছে সমাজের সকল স্তরের মানুষ। যার নিদর্শন ছিল রবিবার সন্ধ্যায় বট পাকুড়ের বিয়ের আসরে উপচে পড়া মানুষের ভীড়।DSCN8170

Loading...
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code:

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট