দুস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ  কালিয়াগঞ্জ শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু সেবা সমিতি


সোমবার,২১/০৫/২০১৮
613

পিয়া গুপ্তা---

অর্থ অনর্থের মূল কারণ।তাই অর্থ দিয়ে কোন সেবা করলে সেই সেবায় থাকে না কোন মনের প্রাণ ।তাই অর্থ ছাড়াই  বছরের পর বছর সেবা করে এক অভিনব দৃষ্টান্তের  স্থাপন করে চলছে  কালিয়াগঞ্জের নাটমন্দিরের  শ্রী চৈতন্য সেবা সমিতি।

সকাল হতেই কালিয়াগঞ্জ নাটমন্দির প্রাঙ্গণের দৃশ্য টাই যেন পাল্টে যায় এখানে  ।নবম দশম শ্রেণীর হত দরিদ্র ঘরের ছেলে মেয়েদের  কলরবে নাটমন্দির প্রাঙ্গন  মুখরিত হয়ে ওঠে। ছোটো বড়ো সকলেই একসুরে একগানে প্রার্থনা শেষে বসে পরে বইয়ের খাতা হাতে ।নাটমন্দির প্রাঙ্গণে এই  ছবি যেন বহু পুরোনো ।ওই ছেলেমেয়েদের ভিড়ে গিয়ে জানা যায় ওদের কারো বাবা নেই,কারো আর্থিক পরিস্থিতি  ভীষণ খারাপ,কারো বাবা থাকলেও পড়াশুনোর খরচ বইতে পারে না।পড়াশুনোর অদম্য ইচ্ছে থাকলেও এরা আর্থিক অভাব অনাটনে জর্জরিত ।

তাই এই সব মেধাবী দুস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েদের আজ একটাই আশা কালিয়াগঞ্জের শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু সেবা সমিতি।এই  সমিতি আজ কালিয়াগঞ্জের বহু দুস্থ ছেলেমেয়েদের পড়াশুনো করার  অদম্য ইচ্ছাশক্তি কে ধরে রেখে আজ বহু বছর ধরে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোর সমস্ত খরচ বহন করে এসেছে।এখানে আসা নবম ও দশম শ্রেণীর ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে জানা যায় তারা দূরদূরান্ত  গ্রামাঞ্চল  থেকে আসে  শিক্ষার স্বার্থে কি করে তারা পড়াশুনা শিখে মানুষের মতো মানুষ হবে।এখানে কালিয়াগঞ্জ শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা সমাজের সেবায় এই সমস্ত ছেলেমেয়েরা যাতে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষা দান করে আসছে।যা সমাজের কাছে একটা উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে।

নাটমন্দির শ্রী চৈতন্য  সেবা সমিতি  আজ ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার পাশাপাশি  স্কুলের বই,খাতা,ভর্তির টাকা সব কিছু নিজেরাই দেয় ।শুধু তাই নয় প্রতি বছর তাদের দুর্গাপূজা কিংবা ইদ উপলক্ষে নতুন জামা কাপড় ও দান করে ।এই সেবা সমিতির মুখ্য দুই কর্ণধার বাবলু দত্ত গুপ্ত ও দুলাল কুণ্ডু  জানান আজ থেকে প্রায় 15 বছর আগে তারা কালিয়াগঞ্জের কিছু শিক্ষক ও ব্যবসায়ীদের সাহায্যে কালিয়াগঞ্জের খুব দুস্থ ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আলো তে আলোকিত করার জন্য প্রতিঙ্গাবদ্ধ হয।প্রদীপ দত্ত গুপ্ত জানান কালিয়াগঞ্জ নাটমন্দির প্রাঙ্গণে দুই বেলায় এখানকার ছেলেমেয়েদের পড়ানো হয় ।এখানে যারা পড়ান তারা সকলেই স্কুলে কলেজে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি এখানে আসা  দুস্থ ছেলেমেয়েদের  পড়াশুনোর সকল রকম খরচ বহন করেন।

প্রদীপ বাবু আরো ও জানান সর্বপ্রথম তাদের এই নাটমন্দির সেবা সমিতি তারা কয়েকজন ছেলেমেয়েদের নিয়ে প্রথম চালু করেছিলেন।বর্তমানে বহু দূরদূরান্ত থেকে বহু ছেলেমেয়েরা এখানে আসেন।এখানে আসা ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরা জানান অভাব অনটনের কারণে তারা ছেলেমেয়েদের টিউশন মাস্টার ,বই খাতা ,স্কুলের বেতন কিছুই দিতে পাডতেন না।কিন্তু আজ তাদের ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করে পড়াশোনার সব রকম খরচ বহন করে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা সমিতি।তারা বলেন এখানকার শিক্ষকরা স্বয়ং  যেন  শ্রী মহাপ্রভুর আরেক রূপ।তারা যেভাবে বছরের পর বছর ধরে এমন নিষ্ঠা সহকারে আমাদের মতো  গরীব পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়ান তাতে আমাদের কাছে তারা স্বয়ং দেবতা।

একদিকে ভগবান চৈতন্যের আরাধনা অন্যদিকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা সব দিক দিয়ে এই নাটমন্দির প্রাঙ্গণে যেন স্বয়ং মহাপ্রভু আজ ও বিরাজ করেন।নাটমন্দির প্রাঙ্গণে আসা  শ্রী চৈতন্যের আরাধনায় নিয়োজিত সাধারণ মানুষেরা জানান সকাল ও বিকেল এই নাটমন্দির প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে জ্ঞানের তীর্থস্থল ।যেখানে সকাল থেকেই ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকল ছেলেমেয়েরা আসে  নিজেদের জ্ঞানের ভাণ্ডার কে ভরিয়ে তুলতে।জানা যায় এখান থেকে পড়াশুনো শিখে   বহু দুস্থ ছেলেমেয়েরা আজ ডাক্তার ,কিংবা ইঞ্জিনিয়ারের হয়ে নিজেদের জীবন কে নতুন গতিতে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

Loading...
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code:

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট