উত্তর দিনাজপুরে বাড়ছে বাদাম চাষ


শুক্রবার,২৭/০৭/২০১৮
1100

পিয়া গুপ্তা---

চাহিদা নেই, বাজার নেই। দামও নেই। তাই পাট ছেড়ে বাদাম চাষে ঝুঁকছেন উত্তরদিনাজপুর চোপরা ব্লকের চাষিরা। উত্তরদিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে এবছর চোপড়া ব্লকের বিলাতিবাড়ি ,গোয়ালডাংগী লাবণগছ, সহ কয়েকটি গ্রামে চাষিরা প্রায় কয়েক হেক্টর জমিতে চাষ করে চলছেন বাদাম চাষ। মহকুমা কৃষি দফতরও জানিয়েছে, চাষিদের আগ্রহ কমে যাওয়ায় তাঁদের আর সে ভাবে পাট চাষে উৎসাহিত করা যাচ্ছে না। গত কয়েক ’বছরে ধরে তারা বাদাম চাষ মন দিয়েছে । চাষিরা জানান, এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা। ফসল উঠতে সময় লাগে সাড়ে তিন মাস। এক বিঘা জমি থেকে গড়ে সাড়ে তিন কুইন্টাল বাদাম মেলে। দাম মেলে কুইন্টালপ্রতি ২৪০০ টাকা।

Affiliate Link কলকাতার খবর | Kolkata News

কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে গত কয়েক বছর ডাল ও তৈল বিকাশে এই এলাকার ব্যাপক সাড়া মিলেছে তাই চাষীদের এখন বাদাম চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে ।.বিজ্ঞানকেন্দ্রে নিজস্ব খামারে বাদাম চাষ হাতেকলমে চাষীদের এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র। কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ তথা প্রধান ডাক্তার ধনঞ্জয় মণ্ডল বলেন, এলাকায় চাষীদের মধ্যে ডাল চাষের পাশাপাশি এবার বাদাম চাষের আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে ।বিজ্ঞানকেন্দ্রের খামারে ধরনি, নারায়নী, জি.জি.জি-18ও টি.জি- 51 গবেষনা চলছে।

ইতিমধ্যে কৃষকদের মাঝে ধরণী ও টি.জি 51, এই দুটি জাত নিয়ে চাষবাস শুধু হয়েছে।বাদাম চাষী আনোয়ার আলী জানান যে জমিতে অন্যকোন ফসল উৎপাদন হয়না, সেই জমিতেই ধান ও পাটের চেয়েও ভালো দামের ফসল চীনাবাদাম উৎপাদন করছেন তারা। প্রতি একরে ধান উৎপাদন হয় ৪৫ থেকে ৫৫ মন, যার বাজার মূল্য ৩৬ হাজার ৪৪ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে চীনাবাদাম হয় প্রতি একরে ১৫ থেকে ২০ মন, যার বাজার মূল্য ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। তাই ধান সহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় দিন দিন বাড়ছে বাদামের চাষ। তারা জানান, বাদাম ক্ষেতে প্রয়োজনে প্রতি একরে ইউরিয়া ৩০-৪০ কেজি, টি এস পি ৮০-৮৫ কেজি, এমপি ৩৫-৪৫কেজি, জিপসাম ৪৫-৫৫ কেজি প্রয়োগ করতে হয়।

জমিতে ঘাস হলে জমির ‘জো’ বুঝে দুই একটি নিড়ানি ও জমির প্রকার ভেদে দুই তিনটি সেচ দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। প্রবাল আয়ুর্বেদ এন্ড ইউনানী ক্লিনিকের মালিক কবিরাজ জাহাঙ্গীর হোসেন আহমেদ বলেন, চীনাবাদমে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ ভোজ্য তেল পাওয়া যায়। এটি তৈলবীজ হিসেবে সুপরিচিত হলেও এর যথেষ্ট ঔষধি গুন রয়েছে। এতে শতকরা ২৫-৩৩ ভাগ প্রোটিন, ৪০-৫০ ভাগ চর্বি, ১০-২০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট, ২-৩ ভাগ আঁশ, ৭-৮ ভাগ পানি, চুন, ফসফরাস, ভিটামিন ‘এ’ ও ‘বি’ পাওয়া যায়। তাছাড়া এর খইলে ৪২ ভাগ ক্রুড প্রোটিন, ৭ ভাগ চর্বি, ২০ ভাগ কার্কোহাইড্রেট, ৭-৮ ভাগ নাইট্রোজেন, ১.৫ ভাগ ফসফরিক এসিড এবং ১-২ ভাগ পটাশ থাকে। তাই গবাদি পশু ও মুরগীর জন্য এই খইল উৎকৃষ্ট খাদ্য।

তাছাড়া বনস্পতি প্রস্তুত, সাবান, সুগন্ধি দ্রব্য, মোম ও বিভিন্ন ঔষুধ তৈরিতে বাদাম বীজ ব্যবহার করা হয়।  দিন দিন চাষের পরিমাণ বাড়ায় স্থানীয় বাজারের বাদাম বিক্রেতারা বলেন আগে দূর দুরান্ত থেকে বাদাম কিনে আনতে হতো। এখন আমরা নিজের জেলা থেকেই কিনতে পারছি। তাতে লাভের পরিমান বেড়েছে। স্থানীয় ভাবে বিক্রি করতে পারায় পরিবহন খরচ বেচেঁ যাচ্ছে, ফলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরাও। আগামীতে চাষির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেক কৃষক।

Affiliate Link Earn Money from IndiaMART Affiliate

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট