মেলবোর্নে হারাল বর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি, সিডনি তে হারাল সিরিজ। গত বছরকে বিদায় দিল হার দিয়ে, নতুন বছরকে স্বাগত জানাল হার দিয়ে। এই ভাবেই নতুন বছর শুরু হল অস্ট্রেলিয়ার জন্য। যদিও ভাগ্যটা একটু হলেও ভালো ছিল তাই চরম লজ্জার হাত থেকে বাঁচল অস্ট্রেলিয়া। বৃষ্টির জন্য সিডনি টেস্ট অমীমাংসিত ভাবে শেষ হল। অস্ট্রেলিয়া ভারতের কাছে সিরিজ হারল ২–১ এ। ভারত প্রথমবার অস্ট্রেলিয়াতে টেস্ট সিরিজ জিতল। এরসঙ্গে টিম ইন্ডিয়ার মুকুটে আরো একটি পালক যুক্ত হল; এশিয়ার মধ্যে প্রথম দল হিসাবে ভারত অস্ট্রেলিয়াতে টেস্ট সিরিজ জিতল।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, যারা ক্রিকেটকে দশকের পর দশক ধরে শাসন করে এসেছে, প্রতিপক্ষকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে; তাদের আজ এই করুন অবস্থা কেন? একটা কারণ তো আছেই দলের ষ্টার পারফরমার স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার নেই। তা সত্ত্বেও আসল কারণ কোচ, অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যার্থতা। নিজের মাটিতে সবাই শক্তিশালী হয়। কিন্তু এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া টিম ইন্ডিয়ার কাছে ‘আউট প্লেয়েড’ হয়ে গেল।
ইন্ডিয়া যে দুরন্ত পারফর্ম করেছে এ নিয়ে কোন সংশয় নেই। পুজারার মাটি কামড়ে ৪ ম্যাচে ৩ টি অনবদ্য শতরান, মেলবোর্নের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বুমরার ৩৩ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নেওয়া। এগুলোকে যত প্রশংসা করা যায় ততই কম। এর আগেও ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়াতে এসেছিল। সিরিজ জিততে পারেনি কিন্তু হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে ভারত সিরিজ জয়ের দোরগোড়ায় চলে এসেছিল। কিন্তু স্টিভ ওয়ার ইচ্ছাশক্তির কাছে ভারত জিততে পারেনি। তাই ভারতকে সিরিজ ১-১ করেই দেশে ফিরতে হয়েছিল।
২০০৮ সালে অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দল পাড়ি দিয়েছিল। ভারত সিরিজ হেরেছিল ১-২ এ। যদিও সিডনি টেস্টটি বিতর্কিত ছিল। আম্পায়ারিং নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। আম্পয়ারিং সঠিক ভাবে হলে ভারত সিরিজ জিততেও পারত। ভারত অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যেক সিরিজেই লড়াই হয়েছিল, ২০১১ সালের সিরিজ বাদ দিয়ে। কিন্তু এবারের অস্ট্রেলিয়া দলটি ঘরের মাঠেও লড়াই করতে পারল না।
এডিলেডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারত টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪০ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারায়। এটা অস্ট্রেলিয়ার কাছে সুবর্ণ একটা সুযোগ ছিল ম্যাচটি নিজের নিয়ন্ত্রনে আনা। কিন্তু পুজারার মানসিক দৃঢ়তার কাছে তারা হার মানল। তারপর পার্থ টেস্টে তারা দারুন ভাবে ফিরে এসেছিল। কিন্তু শেষ দুটো নির্ণায়ক টেস্টে চূড়ান্ত ব্যার্থতার প্রমান দিল। টেস্ট সিরিজটি একপেশে ভাবে শেষ হল- সৌজন্যে অধিনায়ক টিম পেইন, কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার এবং টিম ম্যানেজমেন্ট। এর সঙ্গে যুক্ত হল প্লেয়ারদের পারফরমেন্স এবং জঘন্য ফিল্ডিং।
টিম পেইন যিনি অস্ট্রেলিয়া টেস্ট টিমের অধিনায়ক, তিনি এই সিরিজে একটিও অর্ধশতরান করতে পারেননি। কিন্তু অধিনায়কের উচিত দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া। সেটা তো তিনি দিতেই পারলেন না। উল্টে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং রিশব পান্টের সঙ্গে স্লেজিং করে বিতর্কে জড়িয়েছেন।
কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার মেলবোর্ন টেস্ট হারের পর বলেছেন, আমাদের দলে কোন বিশ্ব মানের প্লেয়ার নেই। ল্যাঙ্গার এই কথা বলে বোধ হয় নিজের ব্যার্থতা ঢাকার চেষ্টা করেছেন। কারণ শন মার্শ আইপিএলের প্রথম এডিশনে সবথেকে বেশি রান করেছিলেন। বিগত কয়েকটি টেস্টে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের হয়ে রান করেছিলেন। তাঁর সক্ষমতা নিয়ে কোন সংশয় থাকতে পারে না। উসমান খাওয়াজার মতো প্লেয়ারও দলে ছিলেন।
এছাড়া দলে আরো অনেক তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে, যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে বা বিগব্যাস লিগে অনবদ্ধ পারফর্ম করেছিলেন। আর বোলিং নিয়ে তো কোনো কথাই থাকতে পারে না। মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড এবং প্যাটট্রিক কামিন্স এরকম পেস বোলিং যেকোন টিমের কাছে সম্পদ।
জোশ হ্যাজেলউডকে গেলেন মাগ্র্যাত এর সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু হ্যাজেলউড কোন দাগই কাটতে পারলো না। মিচেল স্টার্ক, যিনি ২০১৫ র বিশ্বকাপ রীতিমতো দাপিয়ে রেখেছিল সেই স্টার্কের এই সিরিজের পারফরম্যান্স অত্যন্ত হতাশা জনক। নাথান লায়ন ও প্যাটট্রিক কামিন্স লড়াই করে গিয়েছিলেন।
এডিলেড টেস্ট অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে হেরে গিয়েছিল। স্বয়ং রিকি পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার নেট প্র্যাক্টিসের সময় আসেন এবং ফিঞ্চকে পরার্মশ দেন। পরের ম্যাচ পার্থের প্রথম ইনিংসে ফিঞ্চ ও হ্যারিস শতরানের পার্টনারশিপ করেন। এর থেকে বোঝা যায় অস্ট্রেলিয়া দলে প্রতিভার কোন অভাব ছিল না।
পার্থ টেস্টের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে মেলবোর্ন ও সিডনিতে ভারত ঘুরে দঁড়িয়েছিল। এর সঙ্গে পূজারা ফ্যাক্টরও কাজ করেছিল। যিনি মেলবোর্নে প্রথম ইনিংসে ১০৬ এবং সিডনিতে ১৯৩ রান করেছিলেন। পুরো সিরিজ তিনি ৫২১ রান করেন, গড় ৭৪। চথুর্ত টেস্ট শেষ হওয়ার পর যিনি ম্যাচের সেরা ও সিরিজের সেরা হন।
মেলবোর্নের পিচটা দেখে মনে হচ্ছিল ম্যাচ ড্র হবে কিন্তু অস্ট্রেলিয়া যখন ব্যাট করতে নামে তখন বুমরার দুরন্ত বোলিংয়ের সামনে ১৫১ রানে অস্ট্রেলিয়া অল আউট হয়ে যায়। শুধুমাত্র বুমরার অসাধারণ বল ই হয়েছিল তা কিন্তু নয়, অস্ট্রেলিয়ার অত্যন্ত সাধারণ মানের ব্যাটিংও ছিল। শন মার্শ যে ভাবে আউট হল সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের ছিল। বুমরার একটা স্লো ‘ফুলটস’ বলে এলবিডব্লিউ আউট হন।
বাংলাদেশের মতো যে কোনো দল বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। অস্ট্রেলিয়ান টিমের কোচিং-স্টাফে এখুনি যদি কোন পরিবর্তন না আনা হয় তাহলে আসন্ন বিশ্বকাপে চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত। এই জয়ের ফলে স্বভাবতই উচ্ছসিত ভারতীয় শিবির। টেস্ট সিরিজ জেতার পর বিরাট কোহলি বলেন, আমার কাছে এটা সব থেকে খুশির মুহূর্ত। গাভাস্কার বলেন, ইন্ডিয়া টিম যখন ট্রফিটা নিয়ে সেলিব্রেট করছিল তখন আমার চোখে জল এসে গিয়েছিল।
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More