ভারতের অনেক গ্রাম আছে যারা আজও নেই রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে আছে। সমস্যার পাহাড়ে ঘেরা যে গ্রামগুলোর দুঃস্বপ্ন মেটাবার কেউ ই নেই। শুধু মাত্র ভোটের সময় নেতা মন্ত্রীদের আনাগোনা থাকে এই গ্রামগুলোতে। থাকে তাদের বুকভরা আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি। যেই ভোট চলে যায়। তারপর যেইকার সেই সমস্যার অন্ধকারে থাকতে হয় তাদের। জানেনকি কেউ এখনো এমন কিছু গ্রাম রয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার। যেখানকার হাজার হাজার মানুষরা তাদের গ্রামে বেঁচে থাকার জন্য সামান্য পরিশ্রুত পানীয় জল পান না। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীদের সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম সারতে হয় নোংরা আবর্জনায় ভরা ডোবার জল দিয়ে।
কখনো কখনো আবার তারা বাধ্য হয়েসেই ডোবার জল কে পানীয় জল ভেবে পান ও করে যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। কারন একটাই সরকারের দেওয়া পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরিদপ্তরের যে পানিয় জল সরবরাহের পাইপ রয়েছে তা বছরের পর বছর ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে। শুধু তাই না। যে পানীয় জল সরবরাহের জন্য যে পাইপ রয়েছে সেই পাইপ ফেটে যাওয়ায় সেই পাইপ দিয়ে বিষধর সাপের আনা গোনা হয় তাই বাধ্য হয়ে ভয়েই এই জল পান করা ছেড়ে দিয়েছে গ্রামবাসীরা। এখন তাই গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা ডোবার জল। ফলে সেই খারাপ জল পান করার পরে গ্রামবাসীদের প্রায়শই হরেক রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই। কারন জলের আর একনাম জীবন।আর তাই জীবনের তাগিদেই একমাত্র ভরসা এখন ডোবার জল।
উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জব্লকের বরুনা গ্রাম পঞ্চায়েতের দিলাল পুরের ঝিকরাপাড়া, খারীপাড়া, দেবত্বর পাড়া, আদিবাসিপাড়া,মন্ডলপাড়া,বাইন পাড়া, সরকার পাড়া, সর্ধ্যার পাড়া, জান তলা ওবাসীন তলা। এই এগারোটি সহ আরো বেশ কিছু গ্রামের এখন বাস্তব চিত্র এটাই। দিলালপুরের ঝিকরা পাড়ার বাসিন্দা কমল সরকার, সুসেন দেবশর্মা, ভস্ট রায়, আটোদেবশর্মা, শ্রীমতি সরকার, যামিনীদেবশর্মা,মমতা দেবশর্মা জানান, তারা বছরের পর বছর ধরে জলকষ্টে ভুগছে অথচ সরকারি আধিকারিকরাও জনপ্রতিনিধিরা তাদের গ্রামের এইজ্বলন্ত সমস্যার সমাধানের ব্যাপারেকোন উদ্যোগ ই নেন নি আজ অব্দি।অথচ প্রতিবার নিবার্চনের সময় দেখাযায় প্রতিশ্রুতির ডালি নিয়ে সবরাজনীতি দলের সদস্যরাই এখানেএসে কথা দেয় তাদের সমস্যাসমাধানের ব্যাপারে।
অথচ ভোটগেলেই আবার তোমার দেখা নেই।গ্রামবাসীরা জানান তাদের এখন নামেমাত্র জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরেরতরফে পানীয় জলের ব্যাবস্থা আছেকিন্তু বাস্তবে তা না থাকার সমান।কারন যে পাইপ লাইন দিয়ে জলসরবরাহ হয় তা বহুদিন ধরে খারাপহয়ে আছে ।যে জল সরবরাহ হয় তাখাওয়ার অযোগ্য।এছাড়া এইপাইপলাইনের অবস্থা এতটাই খারাপযে মাঝে মাঝেই সেই পাইপ লাইনদিয়ে বিষাক্ত সাপ বেরিয়ে আসে।ফলে সাপের ভয়ে সেই জল ছুঁয়েও দেখেন না গ্রামবাসীরা। বাধ্য হয়েবাড়ির পাশে কোন ডোবা কিংবাপুকুরে গিয়ে পানীয় জল সহ সংসারের কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় জল নিয়ে আসতে বাধ্যহয় তারা।গ্রামবাসীরা আরো জানানপুকুরের জল নোংরা ও বিষাক্ত হলেওতাদের নিরুপায় হয়ে সেই জল নিয়ে আসতে হয়। ফলে গ্রামে প্রায়শইঅসুখ বিসুখ লেগেই থাকে।
অন্যদিকে এই গ্রামগুলির উপর দিয়ে যেরাস্তা গুলি গেছে তার হাল যা তা রাস্তানা বলাই ভালো। গ্রামবাসীরা আরোবলেন এই সমস্যা তাদের একদিন বাদুইদিনের না এই সমস্যা তাদেরবছরের পর বছর ধরে হয়ে আসছে। অথচ তাদের দেখার কেউ নেই। তাইতারা ভারতে বসবাস করেন মনেকরেন কোন নেই রাজ্যের বাসিন্দাহয়ে আছে। কবে তাদের সমস্যারসমাধান হবে তারা কেউ বলতে পারবেনা। অবিলম্বে তাদের সমস্যার সমাধানযদি না হয় তাহলে আগামী লোকসভাভোটে তারা এবার ভোট দিবেন কিনাতারা ভাববেন।
এদিকে তারা বলেন কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিরতাদের সমস্যার সমাধানের ব্যাপরেউদাসীন। কবে তাদের সমস্যা সমাধানহয় এখন সেটাই তারা দেখছেন। গ্রামবাসীরা জানান বহুদিন ধরে তারাপুকুরের নোংরা জল পান করে আসলেও এব্যাপারে কেউ দেখছে না। এদিকে জেলা পরিষদের তৃনমূলেরজয়ী সদস্য দধি মোহন দেবশর্মাজানান, এই প্রথম তিনি বিষয়টিজানলেন এই গ্রামের সমস্যা। আগামীদিনে যাতে গ্রামবাসীদেরপানীয় জলের সমস্যা ও রাস্তাঘাটেরসমস্যার দ্রুত সমাধান করা যায় সেব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্তা নিবেনসংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে।