করোনা বিপর্যয় মোকাবিলা এবং লক ডাউন সময়কালে বিপর্যস্ত মানুষের প্রতি সরকারি ব্যর্থতার প্রতিবাদে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল ৯ দফা দাবিতে ১৬ টি বামপন্থী ও সহযোগী দলের রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। সর্বত্র লক ডাউনের নিয়ম মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বিকেন্দ্রীকৃতভাবে দাবিসমূহের প্ল্যাকার্ড সহযোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কলকাতার মূল বিক্ষোভটি সংগঠিত হয় হো চি মিন মূর্তির পাদদেশে।
প্রসগত ১৯৭৬ সালের এই দিনে ৩০ এপ্রিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে ভিয়েতনামের মানুষ চূড়ান্ত মুক্তি লাভ করেন। সেই দিনটিকে স্মরণ রেখে কলকাতার বিক্ষোভ ভিয়েতনামের অবিসংবাদী নায়ক হো চি মিন-কে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর মূর্তির পাদদেশে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে রানি রাসমণি রোডে মার্কস- এঙ্গেলসের মূর্তির পাদদেশে সমবেত হয়ে সেখান থেকে হো চি মিন মূর্তিতে যাওয়া হয়। আরো উল্লেখযোগ্য হল : এবার করোনায় যখন পৃথিবীতে এই প্রতিবেদন লেখার সময় সোয়া ২ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছেন। ভিয়েতনাম হল একমাত্র দেশ যেখানে একজনও করোনায় মারা যায়নি।
কলকাতায় হো চি মিন মূর্তিতে সকল দলের পক্ষ থেকে প্রতীকী নেতৃত্ব হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু , সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি , সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র , আর এস পি’র সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য , ফরোয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি , সিপিআইএমের লিবারেশন-এর বাসুদেব বসু , পিডিএস- এর সমীর পুততুন্ত , আরসিপিআই’র শৈবাল চ্যাটার্জি , মার্কসবাদী ফরোয়ার্ড ব্লকের জয়হিন্দ সিং প্রমুখ। সিপিআই’র পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও এআইটিইউসি’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ঊজ্জ্বল চৌধুরী , কালান্তর সম্পাদক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় , সঞ্জয় দাস , নীহার ঘোষ । বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী , প্রাক্তন এমপি মহম্মদ সেলিম প্রমুখও বিক্ষোভে অংশ নেন।
৯ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল : পর্যাপ্ত টেস্ট , চিকিৎসক ও সকল ফ্রন্টলাইন কর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জামের ব্যবস্থা , সকল পরিযায়ী ও অসংগঠিত শ্রমজীবী মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা ও তাদের জীবনধারণ নিশ্চিত করা , সকল শ্রমিক- কর্মচারীদের লক ডাউন সময়কালে প্রাপ্য বেতন দিতে মালিকদের বাধ্য করা , সকলের জন্য রেশন ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের গ্যারান্টি , সকল দরিদ্র মানুষকে অন্তত ৬ মাস ধরে ৭৫০০ টাকা করে দেওয়া , তথ্য গোপন না করা , পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া ইত্যাদি।
কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের সর্বত্র এই বিক্ষোভ সংগঠিত হবার খবর আসছে। কোথাও যৌথভাবে কোথাও একক উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে লক ডাউন এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বিকেন্দ্রীকৃতভাবে। প্রসঙ্গত এরাজ্যের ১৬ দলের পক্ষে পরিস্থিতি অনুযায়ী বারেবারে বৈঠক করে মানুষের স্বার্থে অনুরূপ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে
Auto Amazon Links: No products found.