কলকাতা : একটা যুগের অবসান। চলে গেলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সোমেন মিত্র। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে দায়িত্বে ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের ইতিহাসে যেসব নেতাদের নাম প্রথমে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সোমেন মিত্র। তার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তার বুদ্ধিমত্তা অন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল বাংলার রাজনৈতিক জগতে। সোমমেন মিত্র সাংগঠনিক নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। শিয়ালদহ কেন্দ্র থেকে তিনি বহুবার নির্বাচিত হয়ে রাজ্য বিধানসভায় গিয়ে ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন প্রাক্তন লোকসভার সদস্য। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে প্রথম লোকসভায় যান। বর্তমানে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব নিয়ে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে এক শূন্যতা তৈরি হল। সোমেন মিত্রের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন দলের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে তার শুভাকাঙ্খীরা। এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব তাকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমেন মিত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় মমতা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি সোমেন্দ্রনাথ মিত্রের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
তিনি ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ ও শিয়ালদহ কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই নেতার সঙ্গে আমার অনেকদিনের পরিচয় ও হৃদ্যতা ছিল। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হল। সকাল থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে ছিল মানুষের ঢল।
সকাল ১০.৪৫
বেলভিউ থেক বিধানভবনের পথে:
প্রয়াত হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। বেশ কিছুদিন ধরে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হঠাৎই গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বৃহস্পতিবার সকাল ১০.৪৫ মিনিটে তাঁর মৃতদেহ বেলভিউ হাসপাতাল থেকে বিধানভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
সকাল ১১.৩০ -বিধানভবন:
সকাল সাড়ে এগারোটায় প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে এসে পৌঁছায় সোমেন মিত্রের মৃতদেহ। আগে থেকেই বিধান ভবনে তাঁর ভক্তদের ভিড় জমেছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্বরাও উপস্থিত হয়েছিলেন বিধানভবনে। একে একে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন সকলেই। শুধু তাঁর নিজের দল নয়, দলমত নির্বিশেষে সোমেন মিত্রের ভক্তদের ভিড়ে এদিন বিধান ভবনে শোকের আবহ তৈরি হয়েছিল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন, সোমেন মিত্রের দীর্ঘ দিনের সাথী প্রদীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা শ্রদ্ধা জানান বিধান ভবনে এসে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন সোমেন মিত্রের মৃত্যু বাংলার রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হল। তার উদ্যোগে যে রাজনৈতিক জোট চলছিল তা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন এমন নেতৃত্বকে আর কোনদিন বাংলা ফিরে পাবে না। তার চলে যাওয়া কংগ্রেসের অপূরণীয় ক্ষতি। সোমেন মিত্রের দীর্ঘদিনের সাথী প্রদীপ ঘোষ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেসে যান। তিনি বলেন সোমেন মিত্র এবং তিনি দীর্ঘদিন একসাথে রাজনীতির ময়দানে ছিলেন। তাদের মধ্যে যে আন্তরিকতা ছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
দুপুর ১.৩০- বিধানসভা:
বিধানসভা থেকে প্রয়াত সোমেন মিত্রের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্য বিধানসভায়। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য দীর্ঘক্ষন অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু মৃতদেহ প্রায় ঘণ্টা দুয়েক দেরিতে আসায় তিনি তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হাতে দিয়ে গিয়েছিলেন। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রদ্ধা জানান সোমেন মাত্রের মরদেহে।
দুপুর ২ টা- সোমেন মিত্রের বাসভবন:
দুপুর দুটো নাগাদ সোমেন মিত্রের মৃতদেহ পৌঁছায় তার রডন স্ট্রিটের বাসভবনে। স্বামীর মৃতদেহ পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী শিখা মিত্র এবং পুত্র রোহন মিত্র। আবাসনের বাসিন্দারাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
দুপুর ২.৩০- আমহার্স্ট স্ট্রিট:
সোমেন মিত্রের পুরনো পাড়া আমহার্স্ট স্ট্রিট। শিয়ালদহ থেকে বহুবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ছোড়দার মৃতদেহ নিজের পাড়ায় পৌঁছতেই ভক্তদের ভিড় জমে। বিজেপি নেতা মুকুল রায়, তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা তথা মন্ত্রী তাপস রায়, বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সেখানে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
দুপুর ৩ টা- :রাজাবাজার
আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে সোমেন মিত্রের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজাবাজারে সোমেন মিত্রের অফিসে। এই অফিসে বসেই বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন তিনি। রাজনৈতিক চড়াই-উৎরায়ের সময় গুলিও এই অফিসে বসেই কাটিয়েছেন তিনি।
বিকেল ৫.৩০-নিমতলা মহাশ্মশান:
রাজাবাজারের অফিস থেকে নিমতলা মহাশ্মশান সোমেন মিত্রের মৃতদেহ পৌঁছতে লেগে যায় বিকেল সাড়ে পাঁচটা। সোমেন মিত্রকে শেষবারের জন্য দেখতে রাস্তার দু’ধারে ছিল মানুষের ঢল। নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক বাঁধন নয়, সোমেন মিত্রের রাজনৈতিক অঙ্গন ছিল দল-মত নির্বিশেষে মানুষের ভালোবাসা। এদিন শেষ যাত্রায় বারে বারে সেই ছবিটাই ফুটে ওঠে। সাধারণ মানুষের চোখে ছিল জল। নিমতলা মহাশ্মশানেও ছিল মানুষের মাথার ভিড়। দেশ জুড়ে যখন করোনা আবহে মানুষের মধ্যে ত্রাহিত্রাহি অবস্থা ঠিক সেই সময় চোখের জলে বিদায় নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More