পশ্চিম মেদিনীপুর:- বলির রক্তে নয়, পিতৃমাতৃকে পুজোর মধ্য দিয়েই সন্তুষ্ট হন শালবনীর চক্রবর্তী বাড়ির কালী মা। তাই দীর্ঘ ছয় দশক ধরে শক্তির দেবী মা কালীর আরাধনার পুর্বে বাড়ির এয়োস্ত্রীদের মাতৃ রুপে এবং বিবাহিত পুরুষদের পিতৃরূপে পুজো করা হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর ভাদুতলার বাসিন্দা গৌউরমোহন চক্রবর্তী ছিলেন বিষ্ণুর উপাসক। পুজো অর্চনা নিয়েই বেশির ভাগ সময় কাটাতেন, পাশাপাশি তিনি হিতৈষী নামক একটি সংবাদ পত্রের সাংবাদিকতার কাজো করতেন৷ বাড়িতে শালগ্রাম শিলার পুজো না করে তিনি জলস্পর্শও করতেন না৷
পরিবার সুত্রে জানা যায়, একদিন সন্ধ্যে বেলায় নারায়নের পুজো করে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েন গৌউরমোহন চক্রবর্তী। কিন্তু ঘুম তার কিছুতেই ধরছে না। তারপর মাঝরাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব এসেছে, ঠিক সেই সময় আলোর এক ঝলকানিতে চোখ যেন বন্ধ হয়ে যায়, সেই অবস্থায় মা কালী তাকে স্বপ্নাদেশ দেন বাড়িতেই তার পুজো করার। সেই সঙ্গে নির্দেশ দিয়ে যান তার এই পুজোতে বলির রক্ত দিয়ে উপাচার না দিয়ে পিতৃমাতৃকে পুজোর মধ্য দিয়েই তার পুজো শুরু করা হয়৷ এই বলেই মা বিলীন হয়ে যান আর আলোর ঝলকানিও হারিয়ে যায়। তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব কাটিয়ে চোখ মেলে দেখেন কোথাও কেউ নেই কিন্তু তখনও তার কানে অনুরনন হচ্ছে তোর বাড়িতে আমার প্রতিমা প্রতিষ্ঠা কর।
সকালে উঠেই গৌউরমোহন বাবু নিজের স্ত্রী গীতারাণী কে স্বপ্নাদেশের কথা জানান এবং মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা বাড়িতে করবেন তার সিদ্ধান্ত নেন৷ কিন্তু পুজোর বাকি মাত্র হাতে গোনা আর কয়েকটি দিন৷ এই অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে সমস্ত আয়োজন করবেন এই নিয়ে মহা চিন্তায় পড়লেন চক্রবর্তী দম্পতি। কথায় আছে তোমার কর্ম তুমি করো মা, লোকে বলে করি আমি “। ঠিক সেই ভাবেই মা কালী তার আরাধনার সমস্ত কাজ চক্রবর্তী দম্পতির মাধ্যমে করে নেন। তারপর সেই নির্ঘণ্ট দিনে এক ঘোর অমানিশার রাত্রে চক্রবর্তী বাড়িতে শুরু হলো মা কালীর আরাধনা।
বাঙলা তেরোশ সত্তর সালে প্রথমে নিজের মাটির বাড়িতে মায়ের মন্দির নির্মাণ করে পুজো শুরু করেন গৌউরমোহন চক্রবর্তী। পরে তার মৃত্যুর পর এই মায়ের আরাধনার দায়িত্ব নেন তার দুই পুরে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী ও সুরজিৎ চক্রবর্তী। বর্তমানে সেই মাটির মন্দিরের পরিবর্তে সুরম্য কংক্রিটের মন্দিরে পাথরের প্রতিমা নির্মান করা হয়েছে৷ পুজো উপলক্ষে ভাদুতলা সহ পাশাপাশি গ্রামের মানুষ একত্রিত হয় এই চক্রবর্তী বাড়িতে। তিন দিন ধরে চলা এই পুজোতে আয়োজন করা হয় অন্নকূটের। এছাড়াও প্রতি অমাবস্যার পুজোতে বহু ভক্ত সমাগম ঘটে।
পুজোর আয়োজক বিশ্বজিৎ ও সুরজিৎ বাবু জানান, তাদের এই পুজোতে নেই কোনো বলি প্রথা। কারন প্রয়াত গৌউরমোহন চক্রবর্তী কে মা স্বপ্নাদেশ দেন বলির রক্তে উপাচার না দিতে৷ পাশাপাশি পুজো শুরুর আগে পিতৃমাতৃ পুজো ও কুমারী পুজো করা হয়। পুজোর কয়েকদিন আগের থেকেই চক্রবর্তী বাড়িতে ব্যাস্ততা শুরু হয়ে যায়,দুর দুরান্ত থেকে আত্মীয়স্বজন আসেন, গ্রামের সমস্ত মানুষ মিলিত হয়। ফলে তখন চক্রবর্তী বাড়ির এই কালী পুজো হয়ে উঠে এলাকার পুজো৷
তবে এবার করোনার কারনে চক্রবর্তী বাড়ির এই কালী পূজো কিছুটা হলেও ম্লান হয়ে পড়েছে। আসেন নি দুরদুরান্তের আত্মীয়স্বজন, আয়োজনেও হয়েছে ফিকে।
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More