প্রভাত কুমার মিত্র: ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) সংশোধনী বিল 2020 প্রবর্তিত হয়ে গেল কেন্দ্রীয় সরকারের বর্তমান সংসদ অধিবেশনে! এই নতুন আইনে যেসব অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদেশি অর্থ গ্রহণ করবেন বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ সচল রাখতে, তাদের মেনে চলতে হবে বেশ কিছু নতুন নিয়ম – আর এর ফলেই বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, চাকরি হারাচ্ছেন বহু একনিষ্ঠ কর্মী, স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে বহু উন্নয়ন মূলক কাজ, রিসার্চ এবং স্কুল!
কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য সাহায্য হিসেবে যেসব বিদেশি অর্থ ভারতে আসছে সেই অর্থের নিয়ন্ত্রণ দরকার! সেই অর্থ যেন কোনভাবে ভারতের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার না হয! এই বিষয়ে স্বচ্ছতা দরকার!
কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না বিদেশি আর্থিক সহযোগিতায় চলা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনায় স্বচ্ছতা দরকার! কিন্তু ভারতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলি কি দেশের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে আন্তরিকভাবে কাজ করছে না? সাম্প্রতিক করোনা মহামারী এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের পেশাগত ও খাদ্য সংকটে ভারতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এই অভূতপূর্ব সংকটের সময় আন্তরিকভাবে কাজ করে – সরকারি কাজের ফাঁকফোকর গুলি ভরাট করেছে অসাধারণভাবে! এই মহামারিতে যাদের কাছে পৌঁছানোই ছিল সমস্যা, তাদের দৈনন্দিন যন্ত্রণার কথা সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়ে তাদের খাদ্য, সামরিক বাসস্থান ও চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবা দিয়ে নিরন্তন কাজ করে গেছে নিরবিচ্ছিন্নভাবে!

ভারতে অসংখ্য ছোট ছোট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আছে যাদের লোকবল, অর্থবল সীমিত! আবার এমন অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আছে যাদের FCRA Account আছে, কিন্তু বিদেশ থেকে অর্থ ভারতে নিয়ে আসার জন্য যে বিদেশি যোগাযোগ থাকা দরকার তা নেই! এই দু- ধরনের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং তাদের একনিষ্ঠ কর্মী বৃন্দ সীমিত পারিশ্রমিকে এতদিন স্থানীয় প্রাপক ডোনার এজেন্সি মারফত বিদেশী অনুদান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজে জড়িত ছিলেন! উন্নয়নমূলক কাজ গুলি হল; নিখরচায় দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ শেখানো, পশুপালন মাছ চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, বিভিন্ন বৃত্তিমূলক ট্রেনিং দেওয়া, বিভিন্ন সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা শিবির পরিচালনা, মহিলাদের দল তৈরি করা, ক্লিনিক চালানো, বাড়ি তৈরি করে দেওয়া, শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া, স্কুলছুট শিশুদের স্কুলমুখী করা, মহিলাদের ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পে যুক্ত করা ও টিউবয়েল বসানো! এই নতুন ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) সংশোধনী বিল 2020 অনুযায়ী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সংখ্যাতীত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও তার সাথে জড়িত উপরে বর্ণিত উন্নয়ন কাজ গুলি! এর ফলে সেই সংস্থার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মী বৃন্দ এবং তাদের পরিবার গভীর সঙ্কটে! এই করোনা মহামারীর আবহে যেখানে বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থাসহ প্রায় সমস্ত ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, কাজ হারিয়েছেন কয়েক কোটি মানুষ, সেখানে এই ধরনের সরকারি অবিচার ও অবিবেচনার ফলে কাজ হারাতে বসেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অসংখ্য কর্মীবৃন্দ! শুধুমাত্র প্রতিহিংসা এবং সবাইকে নিজের মতে আনার এই অমানবিক দুরভিসন্ধির ফলে চাকরি হারাচ্ছে হাজারো ছেলে মেয়ে! উন্নয়নের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা অসংখ্য মানুষ!
কোনও আইনের বলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই উন্নয়নমূলক কাজের অধিকার খর্ব করা গণতন্ত্রকে খর্ব করার শামিল! আসলে Foreign Contribution (Regulation) Amendment (FCRA) Bill- কে অস্ত্র করে রাজনৈতিক প্রতিযোগী \বিরুদ্ধবাদী কর্মী সংগঠনগুলিকে স্তব্ধ করে দেওয়া যার উদ্দেশ্য, প্রতিবাদ করা চলবেনা সহযোগী হয়ে যাও!
এবার থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কে দেওয়া যে কোন বিদেশী অনুদান প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কে অথবা অন্য ভাষায় যে কোন সংগঠন নিয়ন্ত্রিত ও মালিকানাধীন হবে ভারত সরকারের!
ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্ট অনুযায়ী পাঠানো যে কোন বিদেশী অনুদান কোন স্থানীয় বিদেশি অনুদান প্রাপক এজেন্সি, যাদের FCRA একাউন্ট আছে, তাদের মারফত আর কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা ব্যক্তিকে হস্তান্তর করা যাবে না, এমনকি সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার FCRA এ্যাকাউন্ট থাকলেও! সরাসরি পাঠাতে হবে! কোন মধ্যস্থকারী থাকবে না! অর্থাৎ প্রাপক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কে সরাসরি উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে!
এই খাতে প্রশাসনের খরচ 50% থেকে 20% কমিয়ে আনা হলো!
মিনিস্ট্রি অফ হোম এফেয়ার্স এর ক্ষমতা বাড়িয়ে এমন করা হলো যে, হোম মিনিস্ট্রি ১৮০ দিন পর্যন্ত যে কোন সংস্থার ফরেন কন্ট্রিবিউশন সার্টিফিকেট বাতিল করে রাখতে পারবে!
বিদেশি অনুদান প্রাপক সংস্থার কর্ণধারদের আধার কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক!
বিদেশি অনুদান বাধ্যতামূলকভাবে শুধুমাত্র স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া নতুন দিল্লি মেন ব্রাঞ্চ ১১ সংসদ মার্গ, নিউ দিল্লি ১১০০০১ তে FCRS একাউন্ট খুলে গ্রহণ করতে হবে!
FCRA অনুযায়ী ভারতে মোট ২২,৪৪৭সক্রিয় FCRA রেজিস্ট্রেশন আছে!
কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে দিল্লি গিয়ে FCRA অ্যাকাউন্ট খুলে কাজ করা সম্ভব, না সেটা বাস্তব সম্মত? স্থানীয় ব্যাংক কর্মচারীদের সামলাতে তাদের দিয়ে কাজ আদায় করতে প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জেরবার তার ওপর সুদূর দিল্লি গিয়ে ব্যাংক কর্মচারীদের সামলানো অসম্ভব!
এই লেখার একমাত্র উদ্দেশ্য সমাজের প্রতি কোনা থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো, যাতে কেন্দ্রীয় সরকার যেন বাধ্য হয় এই অগণতান্ত্রিক Foreign Contribution (Regulation) Amendment (FCRA) Bill বাতিল করতে! কারণ এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন চাকুরীরত হাজার হাজার ছেলেমেয়ে চাকরি যেন চলে না যায় তাদের পরিবার এই করণা মহামারীর সংকট সময় যেন অচল না হয়ে পড়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মারফত সংখ্যাতীত গ্রাম এবং শহরের উপকৃত জনগোষ্ঠীর জন্য যেসব উন্নয়নমূলক কর্মসূচী সচল সেগুলি যেনো বন্ধ হয়ে না যায!
সরকারের কাছে অনুরোধ, একটা পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় তাকে অচল না করে, একটা সহজ বিকল্প চালু করা! যেমন প্রত্যেকটি সংস্থাকে একটা বার্ষিক রিপোর্ট হোম মিনিস্ট্রিতে জমা দিতে বলা, যেখানে বিদেশি অনুদানে চলা সমস্ত কর্মসূচির বিবরণ সবিস্তারে লেখা থাকবে!
আইন প্রণয়নকারী দের প্রতি আবেদন, ক্ষমাসুন্দর চোখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অসাধারণ উদ্যোগ গুলি কে দেখুন, ধ্বংস করে দেবেন না।সীমিত পারিশ্রমিক পাওয়া স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অসংখ্য কর্মীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবার এই মারন খেলা বন্ধ করুন,মানবিক হোন!
Best Deals starting from 149
Best Deals on BISS products
Best Deals starting from 129
Cases and Cover starting from 119
Offers on Pet Food
Backpacks and Travel Accessories from Fur Jaden starting Rs. 299
High On Features Low on Price: Smart Watches from Gionee & More