বাংলাদেশে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়: একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন


বুধবার,১৭/০২/২০২১
864

ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মূল পদ্মা সেতুর ৯২ ভাগ ও পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ ৮৪ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ১৬ ফেব্রæয়ারি মঙ্গলবার মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতুর সর্বশেষ অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি। এসময় সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে সেতু প্রকল্পের সম্পূর্ণ অবকাঠামোর কাজ শেষ করে তা যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এ সেতুকে ঘিরে দেশের আগামী দিনের উন্নয়ন আবর্তিত হবে। পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ হলে বাংলাদেশে যোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। আগামী দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী জানান, তার প্রথম স্বপ্ন সড়ক ও পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। দ্বিতীয়ত, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের পথযাত্রায় ভিশন ২০২১, ৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে উপযুক্ত শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত করা। পদ্মা সেতু আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এক সময়ের স্বপ্নের সেতু এখন দৃষ্টিসীমায় দিগন্তজুড়ে দাঁড়িয়ে। পদ্মার তীর থেকে দেখা যাচ্ছে পিলারের দীর্ঘ সারি।

Affiliate Link কলকাতার খবর | Kolkata News

তার উপর একে একে বসানো হচ্ছে ইস্পাতের কাঠামো (স্প্যান)। শুক্রবার বসানো হল ২৫তম স্প্যান। সবমিলিয়ে প্রায় চার কিলোমিটার দৃশ্যমান। বাকি পিলারের উপর বসবে আর ১৬টি স্প্যান। এ কাজ শেষ হবে জুলাইয়ে। এরপর থেকেই শুরু হবে সেতু ছুঁয়ে দেখার অপেক্ষা। সবকিছু ঠিক থাকলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের জুনে উদ্বোধন হচ্ছে স্বপ্নের সৌধ। উদ্বোধনের পর থেকেই শুরু হবে স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। সময়কে উপেক্ষা করে সেতু দিয়ে ছুটবে বাস, ট্রাক, ট্রেন সব। সেতুটি চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এতে মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ১ থেকে দেড় শতাংশ বাড়বে। দারিদ্র্যের হার কমবে দশমিক ৮৪ শতাংশ। নতুন করে গড়ে উঠবে ভারি শিল্প কারখানা। আর এরই অপেক্ষায় যেন বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু শুধু রড, সিমেন্ট ও পাথরের সেতু নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৬ কোটি মানুষের আবেগ। চ্যালেঞ্জকে জয় করার অদম্য স্পৃহা এবং আগামীতে দেশের অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক অর্থায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করার পর সরে যায় আর্ন্তজাতিক আরও তিনটি সংস্থা- এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। এতে পদ্মার আকাশে দেখা দেয় কালো মেঘের ঘনঘটা। ওই সময়ে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। যা ওই বছরের মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৫০ শতাংশ। ফলে নাগালের বাইরে চলে যায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের স্বপ্ন। পরের ইতিহাস সবার জানা।

সব বাধা উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দুঃসাহসিক চ্যালেঞ্জ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এতেই কেটে যায় কালো মেঘ, দিগন্ত আলোকিত করে হেসে উঠে সূর্য। সেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞের মধ্যদিয়ে শুরু হয় স্বপ্নের বীজ বোনা। আর সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে ধরা দিচ্ছে। উদ্বোধনের শুধু সময়ের অপেক্ষা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ সেতু বাস্তবায়ন হলে অর্থনীতিতে সরাসরি এর সুফল আসবে। জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে অর্থনীতিতে সরাসরি তিন ধরনের সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। এতে ওই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য বিস্তার লাভ করবে। বিনিয়োগ বাড়বে। দ্বিতীয়ত, কৃষক সরাসরি উপকৃত হবেন। তাদের উৎপাদিত পচনশীল পণ্য সরাসরি ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠাতে পারবেন। এতে পণ্যের ভালো দাম পাওয়া যাবে। তৃতীয়ত, এ সেতুর ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিস্তার হবে। বিশেষ করে ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে মোংলা বন্দর ব্যবহার করা যাবে। 

Affiliate Link Earn Money from IndiaMART Affiliate

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট