বৃষ্টি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় বর্ধমানের আলু চাষীরা


বুধবার,২১/০১/২০১৫
804

মোল্লা জসিমউদ্দিন,মঙ্গলকোট, বর্ধমানঃ শীতকালে বাংলার অথকারী ফসল হিসাবে আলুচাষ অন্যতম। গ্রামীণ বর্ধমানের কাটোয়া- কালনা- সদর বর্ধমান মহকুমাগুলিতে বরাবর রেকর্ড আলু উৎপাদন হয়ে থাকে । মূলত নভেম্বর মাসের খেত জমিতে আলুর বিজ ছড়ানো হয়। আমনধান বিক্রির টাকা নিয়ে লাভের আশায় চাষীরা নদী – ক্যানেল উপকূলবর্তি জমিতে আলু চাষ করে থাকে । তিন মাসে অন্তত ছয়বার সেচ প্রয়োজন। এবার বোরো চাষের জন্য ডিভিসি কতৃপক্ষ জল দেওয়ার নিশ্চয়তা না দেওয়ায় অনেক চাষী আলু লাগাননি। বিঘে প্রতি কুড়ি হাজার টাকা ঘরচ হয় চাষ- আবাদে। চল্লিশ কুইন্ট্যাল অথাৎ আশি প্যাকেট আলু গড়ে বিঘায় উঠে আসে। প্যাকেটে নুন্যতম ছশো টাকা দাম পেলে চাষী লাভের মুখ দেখবেন । মেমারি – রায়না – জামালগুর – খণ্ডঘোষ – ভাতার – কেতুগ্রাম – কাটোয়া – মঙ্গলকোট ব্লকগুলিতে ব্যাপক হারে আলু চাষ ঘটে। কিন্তু এবার ঘন কুয়াশা এবং তাপমাত্রা নিম্নমুখি হওয়ার জন্য এইসব এলাকায় নাবি ধসা রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তারউপর গত বৃহস্পতিবার সারারাত মাঝারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় আলুচাষে ক্ষতির আশঙ্খা করছে কৃষকরা। মঙ্গলকোট কৃষি আধিকারীক উৎপল খেরারু জানান, এবার সাত হাজার বিঘে জমিতে আলু চাষ চলছে। পালিগ্রাম , চানক, গোতিষ্ঠা, লাখুরিয়া, কৈচর ২ নং ভাল্ল্যগ্রাম, মাঝীগ্রাম অঞ্চলগুলিতে আমরা কৃষি প্রশিক্ষণ শিবিরের মাধ্যমে আলু চাষে সচেতনা বাড়াচ্ছি। যেমন আলু জমিতে সর্বদা জল রাখা ঠিক নয়। মঙ্গলকোটে চল্লিশ বিঘে জমিতে আলু চাষ করা বড় চাষী মনোরঞ্জন ঘোষ বলেন, শীতের বৃষ্টি আলু চাষে কিছুটা ক্ষতি করে দিল। শস্যভাণ্ডার ক্ষ্যাত মক্ষলকোটে সরকরী হিমঘর না থাকায় বিপাকে থাকেন কৃষকগণ। বাম বিধায়ক শাহজাহনে চৌধুরীর অভিযোগ রাজনৈতিক কারনেই মঙ্গলকোটে হিমঘর প্রকল্প নেয়নি নতুন সরকার। অথচ সীমান্তবর্তী কেতুগ্রাম – ভাতার ব্লকে সরকারী হিমঘর হয়নি। মঙ্গলকোটে যেমন বঞ্চিত ঠিক সেইরকম কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক, আউসগ্রামে বাম বিধায়ক থাকার জন্য হিমঘর প্রকল্প নেয়নি নতুন সরকার, অভিযোগ রাজনৈতিক মহলে। কৃষি উৎপাদনে মঙ্গলকোট – কাটোয়া – আউসগ্রাম প্রথম সারিতে পড়ে থাকে। বেসরকারী হিমঘরে আলু নিয়ে যাওয়ার খরচ বেশি পড়ায় অনেক ক্ষেত্রে দাম না পাওয়ার জন্য মাঠে আলু পচে। এই নিয়ে সরকারী উদ্যোগ নেওয়ার দাবি গ্রামীণ বর্ধমানের চাষীদের। আলুর দাম কেজি প্রতি ৬ টাকার নিচে নামলে প্রান্তিক আলু চাষীরা সংকটে পড়বেন। গতবছর বর্ধমানে বেশ কয়েকজন আত্মঘাতি হয় দাম না পাওয়ার জন্য। আমন ধান বিক্রির টাকাটা আলু চাষের পুঁজি হিসাবে খরচ করে থাকে চাষীরা। তাই দাম নিয়ে সরকার কড়া অবস্থান এবং সেই সাথে আলু পাচার ভিন রাজ্যে বন্ধ না করলে চাষী পরিবারে দেখা যাবে আর্থিক – অনটনের, দুঃখ – দুর্দশা মৃত্যু মিছিলের ছবি।

Loading...
https://www.banglaexpress.in/ Ocean code:

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট